২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১২ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  পানির ট্যাংকে লুকিয়ে থেকে ও শেষ রক্ষা হলো না কাবেরী’র   ●  কক্সবাজারের অগ্রগতি ও উন্নয়ন থমকে দিচ্ছে রোহিঙ্গা সমস্যা – শাহজাহান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় বৃহত্তর হলদিয়াপালং ইমাম ও উলামা পরিষদ এর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ নিহত ২, পুড়লো ৫ শতাধিক ঘর   ●  তিন সন্তান রেখে প্রেমিকের সঙ্গে উধাও প্রবাসীর স্ত্রী থানায় অভিযোগ   ●  উখিয়ায় উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে টিসিবি পণ্য জব্দ, তিন ব্যবসায়ীকে অর্থদন্ড   ●  নূরসানা মোর্শেদ পিউলির ঘরে অন্যরকম আনন্দ   ●  রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন উখিয়ার বীর মুক্তিযুদ্ধা আবুল খায়েরের   ●  “নূরসানা মোর্শেদ পিউলির বৃত্তি লাভ”   ●  এসপি হলেন সীমান্ত উপজেলার বাহারছড়ার সন্তান মোঃ সাইফুল্লাহ

“বেগম রোকেয়া দিবসের শিক্ষা: সমতা, ন্যায্যতা এবং গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের অঙ্গিকার”

নিজস্ব প্রতিবেদক:

যথাযোগ্য মর্যাদায় বেগম রোকেয়া দিবস পালন করেছে কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ)।
এ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস-চেয়ারম্যান হামিদা তাহের।
তিনি বলেন, অধিকার এমনে প্রতিষ্ঠিত হয় না। আদায় করে নিতে হয়। নারী নির্যাতন রুখেঁ দিতে নারীদেরকেই তৈরি হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা নারীরা যদি জেগে উঠতে পারি তাহলে নারী সহিংসতা রোধ করতে পারব। নিজেদের প্রয়োজনে আমাদের কাজেকর্মে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) ইপসার উপ-পরিচালক খালেদা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে হামিদা তাহের বলেন, অধিকার আদায়ে আমাদের ক্ষমতা ও দক্ষতা আরো বাড়াতে হবে। শিক্ষার পাশাপাশি নিজেদেরকে দক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।
“বেগম রোকেয়া দিবসের শিক্ষা: সমতা, ন্যায্যতা এবং গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের অঙ্গিকার” শীর্ষক সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তির প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের কর্মী তাহরিমা আফরোজ টুম্পা এবং মিজানুর রহমান বাহাদুরের সঞ্চালনায় সভায় বেগম রোকেয়ার জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে সমতা, ন্যায্যতা এবং গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন কক্সবাজারের নারী নেতৃবৃন্দ।

রোকেয়া দিবসের সভায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা করেন- কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এপিপি এ্যাডভোকেট সাকী-এ-কাউছার, বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক শামিমা আক্তার, কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাসুদা মুর্শেদ আইভি, কক্সবাজার কেন্দ্রীয় মহিলা সমবায় সমিতির সভাপতি ফাতেমা আনকিস ডেইজি, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শিউলী শর্মা, অগ্রযাত্রার চেয়ারম্যান নিলীমা আক্তার চৌধুরী, উখিয়া কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রিতা বালা দে, কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যারাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সরওয়ার, পৌর প্রিপ্যারাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক পরেশ কান্তি দে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিইএইচআরডিএফ-এর প্রধান নির্বাহী মো: ইলিয়াছ মিয়া।
স্বাগত বক্তব্যে বিমল চন্দ্র দে সরকার বলেন, বেগম রোকেয়া নারীবিদ্বেষ এবং নারীবিরোধী সমাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে সমাজের উন্নতি করতে হলে দুটি কাজ করতে হবে। প্রথমত, নারীদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, নারীদের প্রতি পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।
তিনি বলেন, এখন সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে। নারীদের সম্পদের উপর যে অধিকার রয়েছে তার যথাযথ বণ্ঠন নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচকদের মধ্যে এ্যাডভোকেট সাকী-এ-কাউছার বলেন, বর্তমানে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্য বিরাজ করছে। এই বৈষম্য দূর করতে হলে বেগম রোকেয়ার আদর্শকে ধারণ করে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। একটা সমাজে দু’টি চোখ। একটি পুরুষ, আরেকটি নারী। নারী পুরুষকে সমানভাবে এগিয়ে যেতে হবে।

ফাতেমা আনকিস ডেইজি বলেন, বেগম রোকেয়া যেমন তাঁর কর্ম। লেখনীর মাধ্যমে কাজ করে গেছেন, তেমনি আজকের রোকেয়া দিবসের মূল কর্ম চেতনা হলো, তোমরা সারাদেশে শিক্ষার সাহায্যে তোমাদের জ্ঞানের আলো চারদিকে ছড়িয়ে দিবে।

মাসুদা মুর্শেদ আইভি বলেন, সুশিক্ষিত ও অসম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে বেগম রোকেয়ার অবদান অপরিহার্য। বেগম রোকেয়ার দর্শন, শিক্ষা, মানবতাবোধ, সমাজ এবং সাংস্কৃতিক চেতনা অনুসরণ ও অনুকরণ করে তাঁর আদর্শকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি কক্সবাজারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রোকেয়া কর্ণার করার দাবী জানান।
শামিমা আক্তার বলেন, তৎকালীন নারী সমাজের শিক্ষার আলো নিয়ে এসেছিলেন নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া। তিনি অনেক দু:খে থেকেও নিজেকে কখনো অসহায় ভাবেননি। আমরা নারীরা মেধা ও চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজের নেতৃত্ব দেবো। আমাদের সবাইকে নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিতে অগ্রগামী ভুমিকা পালন করতে হবে।

আমরা জানি পরিবার,সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, রাজনীতি-সকল সমস্যা মোকাবেলায় পুরুষের সাথে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে নারী। এই সমাজ নারী ছাড়া কল্পনা করা যায় না। সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নারী এবং নারীদেরকেই নিজেদের ভাগ্যপরিবর্তনের লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে, সচেতন হতে হবে, শিক্ষিত হতে হবে, নিজের অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ শিক্ষা ছাড়া নারীদের এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব।
শিউলী শর্মা বলেন, নারীদেরকে হতে হবে জ্ঞানে-গুনে সমৃদ্ধ। অন্য নারীদের প্রতি হতে সহোযোগী এবং বন্ধুসুলভ। বেগম রোকেয়ার জীবনের শিক্ষা নিজেদের জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারলেই রোকেয়া দিবস সার্থকতা পাবে।

নিলীমা আক্তার চৌধুরী বলেন, সমাজকে পরিবর্তন করতে হলে আগে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। তাই পরিবর্তনের শুরু করতে হলে নারীদেরকে হতে হবে উদ্যোগী এবং উদ্যোমী।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে খালেদা বেগম বলেন, আমরা কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহন চাই। আমরা যদি পরিবার থেকে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে পারি তরে সমাজে নারীরা এগিয়ে যাবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।