২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

অফিস করলেও পুলিশের খাতায় পলাতক  জামায়াত নেতা রহিমউল্লাহ

বিশেষ প্রতিবেদকঃ নাশকতা ও হত্যা মামলার গ্রেফতারী পরোয়না মাথা নিয়েই গত  ৩ বছর ১ মাস যাবৎ কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী জি.এম. রহিমউল্লাহ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা পরিষদ ভবনে নিয়মিত অফিস করছেন। যোগ দিচ্ছেন জেলা ও উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকেও। পাশাপাশি বিভিন্ন সভা, সেমিনার, সরকারী- বেসরকারী  এবং সামাজিক আচার অনুষ্ঠানেও তার পদচারণা রয়েছে। এরপরও পুলিশ তাকে খোঁজে পাচ্ছে না। পুলিশের খাতায় তিনি পলাতক।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতা, অসাধু কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সহযোগীতায় বছরের পর পুলিশের খাতায় পলাতক থেকেও রহিমউল্লাহ তার রাজনৈতিক আদর্শের প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর এজন্য পুলিশকেই দুষছেন সরকারী দলের নেতারা।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধের দায়ে আটক দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় ঘোষনা হয়। সেই রায়ে বিক্ষুব্দ হয়ে জামায়াত- শিবিরের ক্যাডাররা চট্রগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়কের ঈদগাঁও ষ্টেশন এলাকায়  জঙ্গী তান্ডব চালায়। সেসময় হামলাকারীদের আঘাতে আবদুর রশিদ নাসের এক যুবক নিহত হয়। এছাড়া আহত হয় আরো দুইজন। একই সময়ে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ করে এবং সাধারন জনগনের জানমালের ক্ষতি সাধন করার পাশপাশি দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্ত করে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, সেই ঘটনায় ১ মার্চ কক্সবাজার সদর থানায় নাশকতা ও হত্যার দায়ে ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো দুই হাজারকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা লিপিবদ্ধ করা হয়। ওই মামলায় ২০১৫ সালের ১০ মে সদর উপজেলার ভারুয়াখালি ইউপির বানিয়াপাড়ার মৃত লোকমান হাকিমের ছেলে জি.এম রহিমউল্লাহ সহ ১২৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করে পুলিশ। তবে সেই মামলায় জিএম রহিমউল্লাহ’র বিরুদ্ধে এখনো গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে কিনা জানা নেই।
কিন্তু কক্সবাজার সদর আদালতের ওসি কাজী দিদারুল ইসলাম বলেন, জি.এম রহিমউল্লাহ’র বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারি পরায়োনা জারি হয়। সেই থেকে তিনি এখনো পলাতক রয়েছে। এছাড়া ২০১৬ সালের ১৮ মে জি.এম রহিমউল্লাহ’র মাল ক্রোকের আদেশ দেয় আদালত। যা পুলিশ একই বছরের ২৩ নভেম্বর তামিল করে।
এদিকে আদালত সূত্র জানায়, ওই মামলার ১২৭ জনের মধ্যে মো. সোহেল ও হাকিম আলী নামের দুইজন পলাতক আসামী বিরুদ্ধে ক্রোক পরায়োনা মূলতবি থাকায় মামলাটির বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছেনা এবং বিচারকি আদালতে মামলাটি প্রেরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে পুলিশের খাতার পলাতক আসামী জিএম রহিমউল্লাহ বীরদর্পে কক্সবাজার উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করছে। নিয়মিত অফিস করার পাশাপাশি তিনি সরকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভা, সিদ্ধান্ত বৈঠক ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন। এছাড়া যোগ দিচ্ছেন বিয়ে, পার্টি সহ নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে।
এবিষয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, বিষয়টি ভয়ানক। একজন গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত থাকা আইনের পরিপন্থি। আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করব তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহি কর্মকর্তা ( ইউএনও) হাবিবুল হাসান বলেন, আমি মাত্র তিনমাস আগে কক্সবাজারে যোগদান করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তবে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সরকারী প্রোগামে অংশ নেয় এবং অফিস করেন এটি সত্য।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য ৫ অক্টোবর রাত ৯ টা ১৪ মিনিটে জিএম রহিমউল্লাহ ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেনি।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, আমি সদ্য কক্সবাজার যোগদান করেছি। জিএম রহিমউল্লাহ’র বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে কিনা আমার জানা নেই। যদি থাকে তবে অবশ্যই তাকে অতি শ্রীঘই আইনের আওতায় আনা হবে।
আর এ বিষয়ে কথা বলার  জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের মুঠোফোনে কয়েকদফা ফোন দেওয়া হলেও তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেনি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।