মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে ২০ দলের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচির কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিএনপি’র গুমকৃত যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ ২০ দলীয় জোটের সকল গুমকৃত নেতা-কর্মীদেরকে তাদের পরিবারের নিকট সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়া এবং গুম, খুন, বন্দুক যুদ্ধের নামে ঠা-া মাথায় পরিকল্পিত হত্যা, গণগ্রেফতার ও যৌথবাহিনীর নামে বিশেষ বাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল করবে ২০ দল।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘আইনি শাসনের অবসান, নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক দেশব্যাপী তা-ব ও রাষ্ট্রের সকল অঙ্গকে কূটকৌশলে আয়ত্ত্বে নিয়ে অবৈধ ক্ষমতা চিরস্থায়ীকরণের উন্মাদনায় লিপ্ত হয়েছে আওয়ামী লীগ। তারই ফলশ্রুতিতে আজ জাতীয় জীবন অবরুদ্ধ, বাকশালী বন্দীশালায় গণতন্ত্র নামক শব্দটি আজ ক্ষতবিক্ষত। শাসকগোষ্ঠীর অন্ধপ্রতিহিংসা ও ক্ষমতার মোহে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিপন্নপ্রায়।
তিনি বলেন, দেশ থেকে সামাজিক ন্যায় বিচার তিরোধানের ফলেই মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন আজ ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্রসফায়ারের মাধ্যমে দেশব্যাপী ধারাবাহিক গণহত্যা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে অপহরণের পর অস্বীকার, গুম, গণগ্রেফতার, মামলা-হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন বাংলাদেশে যেন রেওয়াজে পরিণত করেছে।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল দরজা বন্ধ করে দিয়ে বর্তমান সংবিধানকে মানবিক ও নাগরিক অধিকার হরণের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিচার বিভাগ ও রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগকে পরিণত করা হয়েছে সরকারের অবৈধ আদেশ পালনের প্রতিষ্ঠান রূপে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, প্রশাসনে নিরপেক্ষ লোকদের বসানো হচ্ছে ‘ওএসডি’ নামক অপমানজনক ও কর্মহীন পদে। ফলে রাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে পরিণত হচ্ছে অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের অভয়ারণ্যে। এই ধরণের অপশাসনে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হতে আর দেরি নেই।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষমূলক অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য দেশের আপামর জনসাধারণকে সাথে নিয়ে ২০ দলীয় জোট আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম চলবে এবং অচিরেই দেশবাসীর আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে এবং সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করতে আন্দোলনের নতুন রূপরেখা ও কৌশল প্রত্যক্ষ করবে শাসকগোষ্ঠী।
তিনি আরো বলেন, দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ জাতীয় নির্বাচন চায়। সমগ্র জাতি আজ সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রামে লিপ্ত। বিএনপি’র অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গুমের পক্ষকাল অতিক্রান্ত হতে যাচ্ছে অথচ এ বিষয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই।
তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে এভাবে বিরোধী দলীয় শত শত নেতা-কর্মীকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন ধরে নিয়ে গিয়ে গায়েব করার পাশাপাশি দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ও জাতীয় নেতাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাতের অন্ধকারে আটক করার পর এখনও পর্যন্ত তার হদিস না পাওয়ার ঘটনায় গোটা জাতিকে শিহরিত ও ভাবিয়ে তুলেছে।
বিবৃতিতে ২০ দলীয় জোট অবিলম্বে সালাহ উদ্দিন আহমেদ এর নিখোঁজ নাটকের অবসান ঘটানোর জন্য সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানানো হয়।
পাশাপাশি আগামী ২৬ মার্চ রোজ বৃহস্পতিবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস দেশব্যাপী বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের অঙ্গীভুত সকল শরীক দলকে তাদের স্ব স্ব উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বত:স্ফুর্তভাবে পালনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিবৃতিতে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।