নেতাকর্মীদের অবৈধ অর্থ-সম্পদ রক্ষা করতে আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার সকালে মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে এক সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্যর জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘উনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, আজ যে রোজগার করছেন তারা, আয় করছেন, সেই আয় নিয়ে পালাতে পারবে না যদি তারা ক্ষমতায় না থাকেন। আজকে তারা স্বীকার করে নিয়েছেন, যে তারা অবৈধ উপায়ে যে অর্থ উপাজর্ন করছে, তাদেরকে জোর করে হলেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে। সে জন্য তারা এসব বলার চেষ্টা করছেন। আমি তার বক্তব্যের ধিক্কার জানাই। ‘
‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, দেশের জনগণ সেটা (জোর করে ক্ষমতায় থাকা) কখনোই মেনে নেবে না। অবশ্যই তাদের নীলনকশা বাস্তবায়ন হতে দেবে না। ‘
শনিবার চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এক প্রতিনিধি সভায় কাদের বলেন, ‘পাওয়ার, ক্ষমতা বেশি দিন থাকে না। অনুরোধ করি, ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। এটা আমানত। টাকা পয়সা বেশি দিন থাকবে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে টাকা-পয়সা নিয়ে পালাতে হবে। তা কি ভাবেন না? দল যদি ক্ষমতায় না থাকে, এখন যে টাকা-পয়সা রোজগার করছেন, তখন এই টাকা নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। এটা ভাবতে হবে। ‘
পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সকাল পৌনে ১১টায় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের শোভাযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত এ সমাবেশ হয়। শোভাযাত্রাটি শান্তিনগর মোড় ঘুরে আবার নয়াপল্টনের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
ন্যায্য মজুরির দাবিসংবলিত নানা প্লাকার্ড হাতে লালসহ রঙিন গেঞ্জি ও নীল ক্যাপ পরে শ্রমিকরা শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আজকে সমগ্র বাংলাদেশে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছে না, তারা নির্যাতিত হচ্ছে শুধু শ্রমিক সংগঠন করার কারণে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়রের জন্য জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য শ্রমিক ভাইদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে, অর্জন করে নিতে হবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। শ্রমিক ঐক্য জিন্দাবাদ। ‘
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, শ্রমজীবী মানুষের কর্মক্ষেত্র নিরাপদ নয়। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ কর্মক্ষেত্রে মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন বায়লার বিস্ফোরণে, শিপইয়ার্ডে শ্রমিকরা মারা যাচ্ছে।
‘আজো শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না, জাতীয় মজুরি কমিশন ঘোষণা করা হয় নাই। আজো শ্রমজীবী মানুষের যে আইন, কর্মক্ষেত্র গণতান্ত্রিক না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ‘
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও বক্তব্য রাখেন।
শোভাযাত্রায় শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ, মেহেদি আলী খান, মোস্তাফিজুল করীম, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও আসাদুজ্জামান বাবুল অংশ নেন।
এ ছাড়াও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান ও সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু উপস্থিত ছিলেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।