২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

আগামী জাতীয় নির্বাচন কি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে?

আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কার বলেছেন, নির্বাচন হবে সবার অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তিনি আরো বলেছেন, জনপ্রিয়তায়, জরিপে যারা উঠে আসবেন তারাই মনোনয়ন পাবেন। অর্থাৎ বিতর্কিত, জনবিচ্ছিন্ন বর্তমান সংসদের দলীয় এমপিদেরও কপাল পুড়তে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে দলের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, সংঘাত শেষ করতে মাঠে নেমেছেন। বিভিন্ন জায়গায় নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণে প্রতিনিধি সভা করছেন।

এদিকে, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাংগঠনিক সফরে জেলায় জেলায় না গেলেও তার দল নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। প্রায় দুই শতাধিক প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এমনকি সরকারী দল যেরকম গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিয়ে জনমত জরিপ করছে, বিএনপিও তেমনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দলীয় মাধ্যমে এই ধারা অব্যাহত রেখেছে। বিএনপি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দিয়ে যত কথাই বলুক ভিতরে ভিতরে আগামী নির্বাচনকে বিনা চ্যালেঞ্জে না দেয়ার পথেই অনেকটা হাঁটছে। বড় দলগুলোর সাথে জোটবদ্ধ হয়ে চলা ছোট দলগুলোও তাদের মতো করে কাজ করছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ আগামী নির্বাচনে বর্তমান সংসদের ৪০ জন এমপির বাইরে আরো ১০০ শক্তিশালী প্রার্থী দেবার লক্ষ্যে কাজ করছেন। নাম না জানা, পরিচয় না পাওয়া ৫৮টি রাজনৈতিক দল নিয়ে জোট গঠন করেছেন। ভোটের বাজারে এর প্রভাব থাক বা না থাক, রাজনৈতিক ময়দানে শোরগোল তুলতেই হয়তো এ উদ্যোগ নিয়েছেন। অর্থাৎ আগামী নির্বাচনেও তিনি ‘ফ্যাক্টর’ থাকতে চান। তাকে বাদ দিয়ে কেউ যাতে ‘পুলসিরাতের রাস্তা’ পার হতে না পারেন।

বিগত ৯ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকায় শাসকজোটের নেতাকর্মীরা একচ্ছত্র ক্ষমতাই ভোগ করেননি, শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উন্নয়নের মহাসড়কে ব্যাপক কর্মকাণ্ডের আড়ালে কেউ কেউ নানা সিন্ডিকেট করে দুর্নীতিরও আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ ক্ষমতার দম্ভে, উন্মাসিক আচরণে দৃশ্যমান হয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে শেখ হাসিনা দিয়েছেন ব্যাপক উন্নয়ন কিন্তু শাসক দলের তৃণমূল নেতারা মনোনয়ন বাণিজ্যই নয়, কমিশন বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্যই নয়, কতৃর্ত্বের লড়াইয়ে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, বিএনপি ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে উঠে আসলে ৫ জনুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সহিংস, হরতাল, অবরোধের রাজনীতি, জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না করা এবং পরবর্তীতে টানা ৯২ দিনের হরতাল অবরোধে, পেট্রোল বোমায় সরকারকে কাঁবু করতে না পারুক; দলের নেতাকর্মীদের মামলা, মোকদ্দমা, জেল ও সরকারের দমননীতির মুখে ঠেলে দিয়ে সাংগঠনিক শক্তি সঞ্চয় করেছে। বিএনপির অনেক নেতা এখনো বিদেশে পলাতক। বিএনপি নেত্রী আগামী নির্বাচনের আগেই মামলায় দণ্ডিত হয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা হবেন কিনা? তাকে বাদ দিয়ে বিএনপি ভোটে অংশ নেবে কিনা? পলাতক নেতারা ফিরে আসবেন কিনা? সেইসব প্রশ্ন বড় আকারেই দেখা দিয়েছে।

তবুও পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি যাই হোক নির্বাচন বর্জনের মতো ভুল বিএনপি আগামীতে যেমন করবে না; তেমনি শেখ হাসিনা নিজেও সামনে ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনের পুনারাবৃত্তি ঘটতে দেবেন না। কারণ জাতীয়, আন্তর্জাতিক বিষয়ই নয়, তিনি তার অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বিশ্বকে দেখাতে চান। কারণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে কোনো শাসক দলের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ইতিহাসের সেই চাকাকে ঘুরিয়ে দিয়ে তিনি নতুন রেকর্ড গড়তে চাচ্ছেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেই এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সব দলের জন্য নিশ্চিত করলেই ভোটের উৎসবে মানুষের জোয়ার নেমে আসবে। সেখানে পরিস্থিতি বা ভোটের ফলাফল কি হতে পারে তা অনেকেই আঁচ করছেন। এখন পর্যন্ত সরকারি দল হোক, বিরোধী দল হোক, হোন রাজনীতির পর্যবেক্ষক; কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, কি হবে আগামী নির্বাচনে? গ্রহণযোগ্য হবে কি আগামী নির্বাচন? এই প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে সবখানে।

সূত্র- পূর্বপশ্চিম

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।