নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলার কৌশল নির্ধারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডাকে আজ রবিবার অনলাইন বৈঠকে বসছেন বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের আট দেশের নেতারা। কূটনৈতিক সূত্রগুলো কালের কণ্ঠকে জানায়, আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আর এর মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের পর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) শীর্ষ নেতারা বৈঠক করছেন।
আজকের বৈঠক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হলেও একে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ভারত, বাংলাদেশসহ বেশির ভাগ দেশ ২০১৬ সালে পাকিস্তানে নির্ধারিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় ইসলামাবাদকে ওই সম্মেলন স্থগিত করতে হয়েছে। সন্ত্রাসে পাকিস্তানের মদদ দেওয়ার অভিযোগে সার্কের কার্যক্রম বেশ কয়েক বছর ধরেই স্থবির রয়েছে। এরই মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সম্মিলিত প্রয়াস চালাতে সার্ক নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সের ডাক দিয়েছেন।
মোদির প্রস্তাবে অনলাইন বৈঠকে অংশ নিতে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানও রাজি হয়েছে। তবে ইসলামাবাদ জানিয়েছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অংশ নেবেন না। পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করবেন তাঁর স্বাস্থ্যবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জাফর মির্জা।
এর আগে গত শুক্রবার মোদির প্রস্তাবে সম্মতি জানায় বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটান। সার্কের আটটি দেশের মধ্যে পাকিস্তানই সবার শেষে সাড়া দিল।
শুক্রবার রাতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আয়েশা ফারুকী এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘কভিড-১৯-এর ঝুঁকি মোকাবেলায় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন। আমরা এরই মধ্যে জানিয়েছি যে এ ইস্যুতে সার্ক সদস্যদের ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অংশ নিতে পারবেন।’
ইমরান খান ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের ব্যাপারে আগ্রহ না দেখালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে এতে অংশ নেবেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত শুক্রবার টুইট বার্তায় লেখেন, ‘আমাদের বিশ্ব করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছে। সরকার ও জনগণ এটি মোকাবেলায় তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। বিশ্বের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনগণের বসবাস এই দক্ষিণ এশিয়ায়। তাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমাদের কোনো চেষ্টাই বাদ রাখা উচিত হবে না।’
মোদি আরো লিখেছেন, ‘আমি সার্ক রাষ্ট্রগুলোর নেতাদের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণের প্রস্তাব দিতে চাই। আমাদের নাগরিকদের সুস্বাস্থ্যের জন্য আমরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা করতে পারি। আমরা একসঙ্গে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারি এবং অপেক্ষাকৃত স্বাস্থ্যকর পৃথিবী গড়তে ভূমিকা রাখতে পারি।’
মোদির ওই প্রস্তাব বিষয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের ব্যাপারে বাংলাদেশের সম্মতির কথা জানান।
সূত্রঃ কালের কণ্ঠ
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।