সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী এলাকায় জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে অভিযান শুরুর পর ওই বাড়ি থেকে নারী ও শিশুসহ ৭৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেখানে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন।
অভিযান শুরুর আগে সেখান থেকে গণমাধ্যমকর্মীসহ আশপাশের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকাল ১০টার দিকে আতিয়া মহলে আটকে পড়া লোকজনের মধ্যে প্রথমে চার নারীকে বের করে আনা হয়।
তারা জানান, এরপর শিশুসহ ৯ জনকে বের করে আনা হয়। পরে দুই শিশুসহ আরও ছয়জনকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে পৌনে ১১টার দিকে ১৪ জন এবং ১১টার পর আরও ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়।
কর্মকর্তারা জানান, বেলা পৌনে ১২টার দিকে দুই শিশু ও দুই নারীকে বের করে আনা হয় ওই ভবন থেকে। এরপর আরও একজনে বের করে আনা হয়। পরে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আরও ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়।
ওই ভবন থেকে উদ্ধার হওয়া সবাইকে পাশের একটি বাড়িতে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে এক ব্যক্তিকে সেখানে এনে রাখা হয়। এরপর আরও পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয় ওই ভবন থেকে।
অভিযানের বিষয়টি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রোকনউদ্দীন সমকালকে নিশ্চিত করেন।আতিয়া মহল থেকে নারী ও শিশুসহ ৭৬ জন উদ্ধার
এরআগে শুক্রবার ‘জঙ্গি আস্তানা’ আতিয়া মহলের চারিদিকে সোয়াত ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল অবস্থান নেয়। অভিযানে সহযোগিতা করার জন্য সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল সেখানে পৌঁছায়। এরপর পাঁচতলা ওই ভবন ঘিরে রাখে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শিববাড়ির উস্তার মিয়ার ‘আতিয়া মহল’ নামের বাড়িতে তল্লাশির সময় নিচ তলা থেকে পুলিশ ও র্যাবকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে অভিযান শুরু করে বলে জানান সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রোকনউদ্দীন।
বাড়ির মালিক উস্তার মিয়ার ছেলে রিপন জানান, জানুয়ারি মাসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুজন ওই বাসার নিচতলায় ওঠেন। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন বলে জানান তারা।
বাড়ির মালিক উস্তার মিয়া জানান, পাঁচ তলা ভবনের প্রতিটি তলায় ৬টি করে ইউনিট রয়েছে। এ ভবনে ২৭টি পরিবার বসবাস করে। শুক্রবার তারা সেখানে আটকা পড়েন। এর আগে পাশের আরেকটি চার তলা ভবনের বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয় পুলিশ।আতিয়া মহল থেকে নারী ও শিশুসহ ৭৬ জন উদ্ধার
পুলিশ জানায়, কিছুদিন আগে এই এলাকায় বাড়ির মালিকের কাছে ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়। উস্তার মিয়া তার বাড়ির ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে থানায় যে তথ্য জমা দেন, সেগুলি যাচাই বাছাই করে পুলিশের সন্দেহ হয়। এই সন্দেহের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ তল্লাশিতে গেলে ভেতর থেকে তাদের উদ্দেশ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।