দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত নগরী হিসেবে পরিচিত ইনানীর বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কেটে মাটি পাচার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি চলছে বিভিন্ন খাল-নদী, জলাশয় থেকে লুটপাটের মাধ্যমে বালি উত্তোলন। নব্যতা সংকট দূরীকরণের লক্ষ্যে চলতি মৌসুমে সরকারি ভাবে এসব খাল ইজারা দেওয়া না হলেও এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী চক্র স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বালি উত্তোলন ও পাচার করায় পর্যটন পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে পরিবেশবাদী সচেতন মহলের পক্ষ থেকে। এব্যাপারে স্থানীয় গ্রামবাসী প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রদত্ত অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, ইনানীর ছোট খাল, বড় খাল, চোয়াংখালী খাল, চেংচরি খাল ও মনখালী খাল থেকে নির্বিচারে বালি উত্তোলন পূর্বক গাড়ি প্রতি দেড় হাজার টাকা হারে বিক্রি করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, খাল থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে বিপুল পরিমাণ ফসলী জমি, বসতভিটা ও ক্ষেতখামার নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। গত ৫ বছরে প্রায় অর্ধ শতাধিক পরিবার ভিটামাটি হারিয়ে বনভূমির জমিতে আশ্রয় নিয়েছে। স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা মোকতার আহমদ লাভু অভিযোগ করে জানান, পাহাড় কেটে মাটি পাচার ও সরকারি বালি মহাল থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে ১৮/২০টি ডাম্পার গাড়ী। সে আরো জানান, ভুট্টো নামের এক ব্যাক্তির ছত্রছায়ায় ৭/৮ জনের একদল সিন্ডিকেট ইনানী রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অনবরত পাহাড় কেটে মাটি পাচার ও খাল থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন করে বিভিন্ন নির্মাণ কাজে সরবরাহ করছে।
প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইতিমধ্যে ওইসব অবৈধ বালি উত্তোলনকারীদের সর্তক করে দিয়ে বলেছেন, অবৈধ ভাবে খাল থেকে বালি উত্তোলন করা হলে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করা হবে। এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ইনানী বিট কর্মকর্তা সাদেক মোহাম্মদ জানান, ইনানী খালে এখনো পানি রয়েছে। এমতাবস্থায় কিভাবে বালি উত্তোলন করা হবে তা আমার জানা নেই। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলনের বিষয়টি তাকে অবহিত করা হলে প্রতি উত্তরে তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পাহাড় কেটে মাটি পাচার ও খাল থেকে বালি উত্তোলনের ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন চৌধুরী জানান, এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় একাধিকবার আলোচনা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক গোবিন্দ দাশ বালি উত্তোলনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বালি উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত গাড়ী গুলো জব্দ করার চেষ্টা করলে চালক চাবি নিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা মীর আহমদ জানান বালি উত্তোলন ও পাহাড় কাটার ব্যাপারে গত ৩ মাসে ৬৭ জনকে আসামী করে ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন ও পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে সবসময় স্বোচ্ছার থাকার কথা স্বীকার করলেন স্থানীয় সাংবাদিকদের।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।