১৮ এপ্রিল, ২০২৫ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১৯ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

ইলিশ জালে নেই, আছে হিমাগারে

Panta_Ilish আবহমানকাল ধরে বাংলায় ঘটা করেই উদযাপন করা হয় পহেলা বৈশাখ। প্রাণের এ উৎসব উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ পান্তা-ইলিশ। যুগ যুগ ধরে চলে আসা ঐতিহ্য ধরে রাখতে যেন ইলিশ মাছের বিকল্প নেই বাঙ্গালীদের কাছে! কিন্তু এবার ইলিশের বর্তমান অবস্থা জেনে হতাশ হতে হবে সৌখিন ইলিশভোজীদের।

চট্টগ্রাম নগরীর ফিশারী ঘাটের মাছের আড়তদাররা জানান, সদ্য ধরা পড়া নতুন ইলিশ মাছ আড়তে একেবারেই নেই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একই অবস্থা বিরাজ করছে। যা অল্প আসছে তার চাহিদা বেশী থাকায় দামও বাড়তি। তবে হিমাগারে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ মাছ মজুদ রয়েছে। কিন্তু এসব ইলিশ মাছের স্বাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ মৎস্য বিক্রেতারা।

জানা যায়, পহেলা বৈশাখে বেশি লাভের জন্য অনেকে ইলিশ মজুদ করেছে। বেশিরভাগ মাছ ব্যবসায়ী হিমাগারে কিংবা ফ্রিজে জমা রেখেছে ইলিশ মাছ। বাজারে ছাড়ছে অল্প কিছু। এসব কারণেই ইলিশ মাছের দাম বাড়ছে।

এদিকে পহেলা বৈশাখ যত এগিয়ে আসছে, ইলিশের দামও পাল্লা দিয়ে তত বাড়ছে। বৈশাখকে কেন্দ্র করে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন ইলিশ মাছের ক্রেতাও বেশি। বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে বেশি দামে ইলিশ মাছ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

রোববার দুপুরে নগরীর ফিশারী ঘাটের মাছের আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, ছোট সাইজের নতুন ইলিশ মাছ এক হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের নতুন ইলিশ কেজি প্রতি দুই হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে তিন হাজার টাকা কেজি দরে। তবে নতুন ইলিশ মাছ নেই বললেই চলে। দুই-একটি পাওয়া গেলে তা একই দরেই বিক্রি হচ্ছে বলে আড়তদাররা জানিয়েছেন।

এছাড়া হিমাগারে বা ফ্রিজে রাখা এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২শ টাকায়। আর ৫শ থেকে ৬শ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬শ থেকে ৬শ ৫০টাকায়। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১৫শ টাকা কেজি দরে।

Ilshaএদিকে নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার, কাজীর দেউড়ি বাজার ও চৌমুহনীসহ বিভিন্ন বাজারে ইলিশ মাছ দেখা না গেলেও অর্ডার দেয়ার সাথে সাথে হিমাগার বা ফ্রিজ থেকে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ মাছ নিয়ে হাজির হচ্ছেন বিক্রেতারা।

রোববার দুপুরে আড়ত থেকে খুচরা বাজার রিয়াজউদ্দিন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, অর্ধশতাধিক মাছ বিক্রেতাদের মধ্যে মাত্র একজন ছোট সাইজের ইলিশ মাছ বিক্রি করতে বসেছেন। ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০টাকায়। এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩শ ৫০ থেকে ১৪শ টাকায়।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের ইলিশ মাছ বিক্রেতা মাহফুজ আলম বাংলামেইলকে বলেন, ‘বর্তমানে নতুন ইলিশ মাছ পাওয়া না গেলেও সরবরাহ ঠিক আছে। কিছুদিন আগে ধরা পড়া ইলিশ এখন বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ইলিশের দামও কম।’

বাজারের আরেকজন মাছ বিক্রেতা মো. কামাল, যিনি ইলিশ মাছ ছাড়া অন্যান্য মাছ বিক্রি করছেন। বাংলামেইলকে তিনি বলেন, ‘ইলিশের অবস্থা এখন ভাল না। এখন যে সব মাছ বিক্রি হচ্ছে তা গত মৌসুমের ধরা। এই ইলিশ খেয়ে স্বাদ পাওয়া যাবে না।’

নববর্ষের জন্য রিয়াজউদ্দিন বাজারে ইলিশ মাছ কিনতে এসেছেন দেওয়ানহাটের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক। তিনি বাংলামেইলকে বলেন, ‘নববর্ষ উপলক্ষে আগেভাগে ইলিশ মাছ কিনতে এসেছি। কিন্তু নতুন ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।’

রোববার ভোরে সাগর থেকে ফিরে আসা মৎস্যজীবী মো. বেলাল বাংলামেইলকে বলেন, ‘বর্তমানে ইলিশ মৌসুম না হওয়ায় সাগরে বার বার জাল ফেলেও তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। সাগর উত্তাল থাকায় জালে ইলিশ ধরা পড়ছে না। এছাড়া সাগরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ ধরা অনেক ট্রলার ফিরে আসছে।’

নগরীর ফিশারী ঘাটের জিহান সিহান এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মো. জাহেদুল ইসলাম বাংলামেইলকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে খুব বেশি ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে না। হিমাগারে অনেকেই ইলিশ মজুদ রেখেছে। পহেলা বৈশাখের কারণে এ সময়টায় বরাবরই বাজারে ইলিশের চাহিদা ও মূল্য দুটিই বেশি থাকে।’

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।