থাইল্যান্ডে মানবপাচারকারী চক্রের অমানষিক নির্যাতনে খুন হলো কক্সবাজার সদরের ইসলামপুর বাঁশকাটা এলাকার আব্দু শুক্কুর প্রকাশ গিন্নিয়া (৪০) নামে এক যুবক। সে ওই এলাকার নুরুল আলমের ছেলে।
নিহতের স্ত্রী রিনা জানায়, বিগত দেড় মাস পূর্বে স্বামী তাকে ছাড়া কাউকে না জানিয়ে পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরানোর কথা বলে দালালের কথা মত সাগর পথে মালয়শিয়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। দীর্ঘ সময় পর দালাল মারফত সংবাদ পায় তাকেসহ অন্যদের থাইল্যান্ডের জঙ্গলে আটকে রেখেছে। মানবপাচারকারী চক্র তাকে জিম্মি করে মোবাইলে স্ত্রীর কাছ থেকে লাখ টাকা দাবি করে। অন্যতায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। দাবিকৃত টাকা দিলে মালয়শিয়া পাঠিয়ে দেবে বলে কথা দেয়। ইতিমধ্যে সাগর পথে যাওয়ার সময় খেয়ে না খেয়ে অসুস্থতার কারণে শারীরিক দুর্বল হয়ে পড়ে স্বামী। যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়া এবং টাকার জন্য দালাল চক্র তাকে অমানষিক নির্যাতন করে। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। এসব গোপন রেখে দালালরা মুক্তিপন দাবি অব্যাহত রাখে। তার আকুতিতে স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা টাকা জোগাডের চেষ্টায় থাকে। এরমধ্যে বিগত ৭ দিন পূর্বে হঠাৎ দালালরা ফোনে জানায় তার স্বামী অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। পরে তার সাথে যাওয়া থাইল্যান্ডে দালালের হাতে জিম্মি একই এলাকার গিয়াস উদ্দীন মোবাইলে উক্ত ঘটনার বর্ণনা দেন এবং মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গত ৬ দিন পূর্বে তার দাফন হয় এবং গত বুধবার পরিবার তার মৃত্যু পরবর্তী কুলখানি সম্পন্ন করে।
নিহতের স্ত্রী রিনা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন ৯ ও ৭ বছর বয়সি তার ২ কন্যা সন্তান নিয়ে কোথায় যাবেন? কে নেবে এ এতিম কন্যাদের ভার? মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর থেকে স্বামীর মা, বাবা, ভাই, বোনসহ স্বজনদের আহাজারিতে দিন কাটছে।
বিধবা রিনার আকুতি, দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে স্বামীকে হারিয়ে তার মতো যেন কাউকে অকালে বিধবা ও সন্তানদের এতিম হতে না হয়। তাই এ দেশ বিরোধী মানব পাচারে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।