নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেতে তৎপরতা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক কার্যক্রম গুছিয়ে আনছে কয়েকটি দল। আর এখনও পর্যন্ত ইসিতে নিবন্ধন না পাওয়া রাজনৈতিক দলগুলো এখন নিবন্ধনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এর মধ্যে ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে আলোচনা করতে চিঠি দিচ্ছে রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি)। এছাড়া গণসংহতি আন্দোলনসহ ২০ দলীয় জোটভুক্ত কয়েকটি দল ও ধর্মভিত্তিক কয়েকটি সংগঠন নিবন্ধনের জন্য কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট দলগুলোর দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
এনডিএম সূত্র জানায়, রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) একটি চিঠি নিয়ে যাবেন ভাইস চেয়ারম্যান এনায়েত কবির। ওই চিঠিতে সিইসি’র সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চাওয়া হবে। প্রাপ্ত সময়সাপেক্ষে এনডিএমের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সিইসি’র সঙ্গে বৈঠক করবে। এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন— দলের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, উচ্চ পরিষদের (সুপিরিয়র কাউন্সিল) সদস্য ব্যান্ডশিল্পী শাফিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান এনায়েত কবির, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল্লাহ এম তাহের ও মুমিনুল আমিন।
চিঠি দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আমরা নতুন দল গঠন করেছি। আমরা সিইসি’র সঙ্গে আলোচনা করার সময় চেয়েই চিঠি দিচ্ছি। সরাসরি নিবন্ধনের জন্য তো আলোচনার সুযোগ নেই। আলোচনায় নিবন্ধনের বিষয়টিই প্রধান ইস্যু হতে পারে। আর সময়মতোই আমরাও নিয়ম মেনে আবেদন করব।’
এদিকে, জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন গণসংহতি আন্দোলন আগামী নির্বাচনের আগেই নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে সারাদেশের বেশিরভাগ জেলা ও অনেক উপজেলাতেই সংগঠনটির শাখা প্রসারিত হচ্ছে। জানতে চাইলে জোনায়েদ সাকি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি। আশা করি ইসি থেকে ঘোষণা এলেই নিবন্ধনের আবেদন করব।’
নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গণসংহতি আন্দোলন নিবন্ধনের সব শর্তই পূরণ করছে। কিন্তু বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধন করার জন্য পাঁচ বছর ধরে অপেক্ষা করতে হয়। এটা খুবই অগণতান্ত্রিক একটি প্রক্রিয়া। কোনও রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়ার প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশনের সার্বক্ষণিক কাজের অংশ হওয়া উচিত।’
এর আগে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাতে সাড়া দেননি সদ্যবিগত সিইসি আবদুর রকিব।
জানা গেছে, গণসংহতি আন্দোলনের মতো ২০ দলীয় জোটের কয়েকটি শরিক দলও নিবন্ধনের কথা ভাবছে। যদিও এসব শরিক দলের অনেকগুলোই সাংগঠনিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল থাকায় নিবন্ধন নাও পেতে পারে। নিবন্ধন না পেলে এবং নির্বাচনের সময় জোট অক্ষত থাকলে ধানের শীষ মার্কা নিয়েই নির্বাচনের ইচ্ছা দলগুলোর। এ বিষয়ে এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি কোনও দলই। জোটের অভিভাবক দল বিএনপির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে তবেই মুখ খুলতে চান শরিক দলগুলোর নেতারা।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাৎ হোসেনকে ফোন করলে তিনি বিষয়গুলো নিয়ে পরে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন। আর ফোন করলেও রিসিভ করেননি নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।