কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে চলতি ইটভাটা মৌসুমকে টার্গেট করে বন বিভাগের নাকের ডগায় প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকার কাঠ ও লাকড়ী পাচারের মহোৎসব অব্যাহত রয়েছে। পাচারকারীদের দেয়া অবৈধ মাশুহারা আদায়ের ব্যস্ত থাকায় সরকারী বনজ সম্পদ রার মত যেন ফুসরত নেই বনকর্তাদের। এ অবস্থায় জড়িতদের বিরদ্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা না নিলে ঈদগাঁও পার্শ্ববর্তী এলাকার অবশিষ্ট বনজ সম্পদ নিমিশেই উজাড় হয়ে যাবে বলে বিজ্ঞ মহলের আশংকা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ককসবাজার উত্তর বন বিভাগের সদর এরিয়ার সিংহভাগ বনজ সম্পদ সমৃদ্ধ এলাকা হচ্ছে বৃহত্তর ঈদগাঁও ও পার্শ্ববর্তী ঈদগড় বাইশারী বনভুমি। এ সম্পদ রার্থে ডজনাধিক বনবিট রয়েছে। যেগুলো হচ্ছে ঈদগাঁও ভোমরিয়াঘোনা রেঞ্জ, মেহেরঘোনা রেঞ্জ,ফুলছড়ি রেঞ্জ,মাছুয়াখালী বনবিট, নাপিতখালী বনবিট, রাজঘাট বনবিট,ধলিরছড়া বনবিট,পুর্ণগ্রাম,ঈদগড় ও বাইশারীর ৪ বনবিট। সরকার স্ব স্ব বনবিট পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ দিলেও অসাধু কর্মকর্তাদের রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া স্বপ্নই বনজদ্রব্যের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। এসব কর্মকর্তারা সরকারী বেতন ভাতা ভোগের পরও যথাযথ দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে বনখেকো চিহ্নিত ভুমি দস্যূদের সাথে আঁতাত করে বনবিট এলাকার নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্ট দিয়ে অদ্যাবধি হরদম মাসিক মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ল ল টাকার কাঠ ও লাকড়ী তাদের নাকের ডগার উপর দিয়ে পাচারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে, পাচারের পয়েন্ট গুলো হচ্ছে ভোমরিয়াঘোনা বনবিটের অধীন ঈদগাঁও ঈদগড় সড়ক, ঈদগাঁও নদী, ভাদীতলা সড়ক, গজালিয়া সড়ক,মেহেরঘোনা রেঞ্জের কলেজ গেইট সড়ক, কালিরছড়া,মাছুয়াখালী,ধলিরছড়া বনবিটের থলীয়ঘোনা,ঈদগড় বনবিটের অধীন ভেন্ডেবাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা, ফুলছড়ি রেঞ্জের অধীন নতুন অফিস ভিলিজার পাড়া, নাপিতখালী বিটের অধীন, ডুলাফকির মাজার এলাকা এবং রাজঘাট। এসব পয়েন্টে দায়িত্বরত বন কর্মকর্তারা সড়কে গাছের কল বসিয়ে বনজ সম্পদ রার নামে উল্টো পাচারের জন্য আনা কাঠ ও লাকড়ী ভর্তি গাড়ি পিচু নির্দিষ্ট হারে উৎকোচ আদায়ের জন্য এলাকার কিছু দালাল প্রকৃতির লোককে নিয়মিত বেতনে নিয়োজিত রেখেছে। এদের খুশি করতে পারলে অবৈধ সব কাঠ পাচার বৈধতা পেয়ে যায়। মুলত এসব দালালরাই স্ব স্ব এলাকার বনবিট গুলোকে নিয়ন্ত্রন করে বলে সূত্রে জানা যায়। বিশেষ করে চলতি মৌসুতে বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা ইট ভাটা গুলোকে টার্গেট করে সন্ধ্যা নামলেই উক্ত পয়েন্টগুলো দিয়ে বন বিভাগের যোগসাজসে লাখ লাখ টাকার অবৈধ কাঠ ও লাকড়ী ভর্তি চাঁন্দের গাড়ি, ডাম্পার ও ট্রাক গাড়ী গুলো প্রতিযোগিতা মুলক ভাবে সরকারী বনজ সম্পদ পাচারের উৎসবে মেতে উঠতে দেখা যায়। এসব যানের বেপরোয়া চলাচলে অনেক সময় সড়কের চলাচলকারী পথচারীরা দূর্ঘটনার সম্মুখীন হন। কাঠ পাচারকারীরা মোটা অংকের টাকায় সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ম্যানেজ করার পাশাপাশি স্থানীয় শক্তিশালী একটি মহলকে হাতে নিয়ে এ পরিবেশ বিধ্বংসে কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে চলতি ইট ভাটা মৌসুমের জন্য সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তাদের সাথে কাঠ পাচারকারীদের গোপনে মোটা অংকের লেনদেন প্রায় সম্পন্ন বলে সূত্রে জানা যায়। সরকারী বন কর্মকর্তারা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার জন্য পাচারকারীদের বিরদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো এসবের প্রতিবাদকারী স্থানীয় সচেতন জনসাধারণকে রহস্যজনক ভাবে বিভিন্ন সাজানো বন মামলায় হয়রানী করে আসছে বলে ভুক্তভোগী সূত্রে প্রকাশ। এদিকে এলাকার সচেতন মহল বনজ সম্পদ রার স্বার্থে এসব দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তাদের বদলী পূর্বক শাস্তির আওতায় আনতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার জরুরী হস্তপে কামনা করেছেন। এছাড়া উল্লেখিত পয়েন্টগুলোতে বিশেষ ঝটিকা অভিযান পরিচালনার জন্য বিজ্ঞ মহল বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপরে জররী হস্তপে কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কেরামত আলী মল্লিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে ইটভাটাগুলোতে কাঠ পোড়ানোর ঘটনা সত্য বলে জানান এবং অভিযোগ উঠা বিট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।