কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে ওয়েল লাইফ ফেয়ার এসোসিয়েশন নামের একটি ভূঁয়া এনজিও সংস্থার প্রতারণার শিকার হয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠি সর্বশান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। লাভের প্রলোভনে শত শত লোকের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। পরে ওই টাকা চড়া সুদে হতদরিদ্র লোকজনের মাঝে চড়া সুদে ঋণ হিসাবে বিতরণ করছে বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ইউছুপেরখীল গ্রামের জনৈক আমানুল হক ও কয়েক ব্যক্তি বিগত এক বছর পূর্বে লাইফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন নামে এনজিও সংস্থার নাম ভাঙ্গিয়ে নানা প্রলোভনে এলাকার সহজ-সরল জনগোষ্ঠির কাছ থেকে বিভিন্ন অংকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে ঐ টাকা চড়া সুদে ব্যবসায়ী ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করে। শুরুতে ঈদগাঁও তরকারী বাজারস্থ সুফিয়া মার্কেটের ২য় তলায় অন্যের একটি কক্ষে তাদের কার্যক্রম চালায়। বর্তমানে অফিস ছাড়াই চলছে এ এনজিও’র কার্যক্রম। প্রচার প্রসারের জন্য তারা চোখ জুড়ানো স্টিকার ও পোষ্টার বিভিন্ন স্থানে লাগায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক ব্যক্তি জানান, এ এনজিওটি দরিদ্র মানুষের সেবার বুলি উড়িয়ে এর আড়ালে অবাধে সুদের ব্যবসা করে চলছে। এ অবৈধ টাকায় এনজিওটির কর্মকর্তারা অল্প সময়ের মধ্যে তাদের জীবনযাত্রার মান পাল্টে ফেলার পাশাপাশি রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। এ এনজিওটি এলাকার শত শত মানুষকে আত্মকর্মসংস্থানের নামে ঋণ দিচ্ছে। আবার তাদের কাছ থেকে জোর পূর্বক দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক হারে চড়া সুদে টাকা আদায় করছে। সুদের টাকা আদায়ে এমন কোন পন্থা নেই তারা অবলম্বন করে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২ ভুক্তভোগী জানায়, এক সপ্তাহ কিস্তি দিতে দেরি হলে তাদের উপর নেমে আসে মানসিক নির্যাতনসহ অশ্রাব্য দুর্ব্যবহার। আর্জেন্ট ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে ভিটেবাড়ি পর্যন্ত বন্ধক দিতে হয়েছে অনেকের। এমনকি এ ঋণের টাকা নিয়ে অনেকের সংসার ভাঙ্গার উপক্রম ও দেখা দিয়েছে বলে এলাকার লোকজন জানায়। অফিস বিহীন এ সংস্থাটির এমডি হিসাবে দাবীদার আমানুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নিজেকে এনজিওটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিচয় দিয়ে অফিস বিহীন তাদের কার্যক্রম চলছে বলে স্বীকার করেন। তবে অনুমোদনের বিষয়টি জানতে চাইলে সাক্ষাতে কথা বলার অনুরোধ জানায়। কক্সবাজার সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ ছলিম উল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে উক্ত নামে কোন এনজিও বা সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন নেই বলে জানান। এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্রুত সমবায় অফিসকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিবেন বলে জানান। এলাকার সচেতন জনসাধারণ ও ভুক্তভোগীরা উক্ত এনজিও’র বিষয়ে তদন্ত পূর্বক জড়িতদের আইনের আওতায় এনে হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধার করে দিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।