২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

ঈদগাঁওর সাংবাদিকতা গতি হারিয়েছে

received_1831129863811913
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওর সাংবাদিকতা সাম্প্রতিক সময়ে গতি হারিয়েছে। সংবাদ লিখা- সহকর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ পালন সব সূচকেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি। বিশেষ করে সংবাদ লিখা এই পয়েন্টটি বাদে পরের দুটি পয়েন্টে আমাদের অর্জন শূন্যের কোটায়। এখন আর কোনো সাংবাদিক তাঁর অপর এক সহকর্মীর প্রতি বিশেষ টান অনুভব করেনা। তবে এই ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে কারো কারো ইস্যুভিত্তিক যোগাযোগ অটুট থাকতে পারে। অথচ খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, যখন শুধু দলগত যোগাযোগই নয়, পরিবারের সদস্যদের নাম পরিচয় জানা ছিল অনেকের। প্রতিদিন কোনো না কোনো দৈনিকে এক বা একাধিক সংবাদ প্রকাশ পেত। দিনের ঘটনার বাইরে অনুসন্ধানী ও রাজনৈতিক সংবাদও কম উঠে আসত না। বলা যায় প্রায় প্রতিটি সংবাদপত্রে ছোট্র এই মফস্বলে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কজন সাংবাদিক নিজ গন্ডি ছাপিয়ে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। পদ-পদবীরও উন্নতি হয়েছে অনেকের। এসব কারণে কক্সবাজার জেলা শহরের অভিজাত সাংবাদিকরাও ঈদগাঁওর গতিশীল সাংবাদিকতার প্রশংসা করতেন।
শুধু সাংবাদিকতায় নয়, সামাজিক উন্নয়নে সাংবাদিকদের ভূমিকারও প্রশংসা পাওয়া যেত। যেমন-দীর্ঘদিন সুপ্ত থাকার পর প্রচারের মাধ্যমে ঈদগাঁও উপজেলার দাবিটি সাংবাদিকদের মাধ্যমেই উঠে আসে। বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নয়ন ও ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠায় সংবাদ প্রকাশের বাইরেও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন সাংবাদিকরা। সামাজিক আন্দোলনে সাংবাদিকরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন আমরা এসবের বাইরে আছি। বিশেষ করে এই কয়েক বছরে প্রিন্ট মিডিয়ার ( মুদ্রিত কাগজ) সাংবাদিকতা ধস নেমেছে। তবে আশার কথা হলো সংখ্যাগত অগ্রগতি হয়েছে অনলাইন সাংবাদিকতার। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও স্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্র প্রকাশ অব্যাহত আছে। কারো কারো নৈতিকতার মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বেশ কয়েকজন তরুণ সাংবাদিক অল্প সময়ে নিজেদের অস্থিত্বের জানান দিতে পেরেছেন। পুরনো সাংবাদিকদের মধ্যেও কারো কারো সততার পারসেন্টিস নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বটে। তবে আনন্দের কথা হলো, এই ঈদগাঁওতে ভালোর সংখ্যায় বেশি।
বেশ কয়েকজন সাংবাদিক সভা, সমিতি, র‌্যালির বাইরেও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করে নামের সুবিচার করে চলেছেন এবং ঈদগাঁওর নামটি উচ্চারণে ভূমিকা রেখে আসছেন। আশার কথা হলো ঈদগাঁওতে কক্সবাজার শহরের প্রায় সকল দৈনিকের প্রতিনিধি রয়েছে। আবার দুঃচিন্তার কারণ হলো, সব কাগজের প্রতিনিধি থাকলেও এই মুহুর্তে কজন ছাড়া অন্যরা সরব নয়। খেয়াল করেছি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনতো দূরে থাক, বড় কোনো ঘটনার সংবাদও দৈনিকে আসছেনা। এসব ভালো লক্ষণ নয়। বলা যায় স্থানীয় সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা বিকাশে বড় অন্তরায়।
আরও একটি বিশেষ দিক আমার কাছে একটু অন্যরকম মনে হচ্ছে। সেটি হলো হাতে গুণা কয়েকজন ছাড়া সাংবাদিক বন্ধুরা এখন প্রশাসনিক দপ্তর, রাজনৈতিক মহল ও সামাজিক অঙ্গনে ছুটাছুটি কমিয়ে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা কয়েকজনকে ছাড়া অন্যদের আমলে নিচ্ছেন না। আর এই অবস্থায় সবার মধ্যে এক ধরণের অদৃশ্যমান অস্থিরতা কাজ করছে বলে মনে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় রাজনীতিকরণ সাংবাদিকদের মধ্যে ভীতি তৈরি করছে। তবে ১২ বছরের ব্যবধানে ঈদগাঁওতে পিআইবির সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন ছিলনা। আমার মনে হয় প্রিয় ঈদগাঁওতে ভারসাম্য ঠিক রাখতে হলে অনেকগুলো দিকের মধ্যে গতিশীল সাংবাদিকতা চলমান রাখা খুবই জরুরি। তা না হলে আমরা ভারসাম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার বাসিন্দা হয়ে যাব।
এসব কথা ফেসবুক বন্ধুদের কাছে অনলাইন সংবাদপত্র তুলে ধরছি ,কারণ আমার কাছে মনে হয় প্রত্যেক ফেসবুক বন্ধু এখন নাগরিক সাংবাদিক। তাঁরা সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরে আমাদের ব্যর্থতার ক্ষত কিছুটা হলেও দূর করছেন। ইতিবাচক অনেক তথ্য ফেসবুক বন্ধুদের কল্যানে পাচ্ছি।
নানা কারণে আমার সাংবাদিকতারও গতি কমেছে। সামাজিক ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে প্রয়োজনীয়তা কমে যাচ্ছে। কাল ভাদ্রে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র যেতে গিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। অবশ্য এতে আমার কোনো কষ্ট নেই। বরং সামান্য পুলকিত হবার সুযোগ আছে। তবে কথা হলো, আমাদের এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নিজেদের ভুলগুলো দূর করে মাঠে নেমে পড়তে হবে। মাঠ থেকে সংবাদ তুলে এনে তা নিজ নিজ গণমাধ্যমে পাঠাতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে কজন সাংবাদিক ভালো করলে চলবে না। ঈদগাঁওর ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে দলগত ধারাবাহিক সাংবাদিকতা খুবই জরুরি।
লেখক: সেলিম উদ্দিন, সম্পাদক ও প্রকাশক- সাপ্তাহিক আলোকিত ঈদগাঁও (প্রস্তাবিত) ।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।