উখিয়ায় জোর পূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টার ঘটনায় মামলা নিতে থানা-কোর্টের দরজায় দরজায় ঘুরছেন অসহায় এক হতদরিদ্র নারী। ঘটনার সাথে জড়িত বকাটেদের ভয়ে এক প্রকার পালিয়ে বেড়াচ্ছে সে। মামলা না দিতে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-দমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসী বাহিনীরা।
গতকাল ১৯নভেম্বর উখিয়ার কোটবাজারস্থ স্থানীয় এনজিও সংস্থা হেল্প কক্সবাজার এর অফিসে অভিযোগ দিতে আসা অসহায় হতদরিদ্র তৈয়বার এই লোমহর্ষক ঘটনার দেখা মিলে! হাতে মামলার কপি নিয়ে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে উক্ত তৈয়বা! কারন কী জানতে চাইলে তিনি মামলার কাগজ পত্র দেখিয়ে বলেন, এলাকার প্রভাবশালী বেলাল ও তার সহযোগীরা মিলে আমাকে নির্যাতন করেছে, যার বিচারের জন্য থানা কোটে ঘুরে কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। আপনারা পারলে একটু সহযোগিতা করেন।
মামলা এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭/১০/১৬ইং তারিখ রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়ার উপকূলীয় ইউনিয়ন জালিয়াপালং জুম্মাপাড়া এলাকার সিদ্দিক আহমদের স্ত্রী তৈয়বা বেগম (৩২) কে একই ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইন্যাশিয়া এলাকার মৃত আবদুর রহমানের পুত্র বেলাল (৩৬), কালুর পুত্র জনি (২৮), ফকির আহমদের পুত্র রহিম আলী (৪২), নুর আহমদের পুত্র মাহবুবুল আলম (১৮) ও দক্ষিণ পাইন্যাশিয়া চরপাড়া এলাকার ছৈয়দুর রহমানের পুত্র সরওয়ার (৩২) রাতের আধারে তৈয়বার বাড়িতে ঢুকে জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। বেলাল ও তার অপরাপর সহযোগীরা যৌন লালসায় চরিতার্থ হয়ে ভিকটিম তৈয়বার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে গুরুত্বর জখম করে। চিৎকার শুনে এলাকাবাসি ছুটে আসলে বীরর্দপে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য সহ এলাকাবাসীরা তৈয়বাকে উদ্বার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে হতদরিদ্র তৈয়বা ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে গত ৩০/১০/২০১৬ইং কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত-২০০৩ এর ৯(৪)খ/৩০) ধারায় মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে উখিয়া থানাকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
উখিয়া থানাকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিলেও তদন্ত কর্মকর্তা আসামীদের সাথে যোগসাজসে তাকে বার বার হয়রানী করে যাচ্ছে বলে তৈয়বা অভিযোগ করেন। তৈয়বা বলেন, আমি গরীব বলে আমার পাশে কেউ নেই। উল্টো আমি ও আমার পরিবারের বিরোদ্ধে মামলা দিয়ে আমাকে দেশ ছাড়া করার হুমকি দিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত। এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই প্রিয়তোষ পালের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আদালত থেকে মামলাটি উখিয়া থানাকে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীগ্রই তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এনজিও সংস্থা হেল্প কক্সবাজার এর নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম এম.এ বলেন, একজন নারীকে এ ভাবে নির্যাতনের পরেও থানায় মামলার তদন্ত নিয়ে পক্ষ অবলম্বন করা আইনত দন্ডনীয়। উল্টো ভিকটিমের বিরোদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে যা সমাজের নারীরা ন্যায় বিচার থেকে বার বার বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, তৈয়বা সুবিচার চেয়ে আমাদের কাছেও একটি অভিযোগ দিয়েছে। প্রয়োজনে তাকে সংস্থার পক্ষ থেকে আইনী সাহায়তা দেওয়া হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।