উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের উখিয়ার ঘাট কাষ্টমস ষ্টেশন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের স্থিত সম্পদ ও উন্নয়ন কাজের বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বার্থান্বেষী মহল। যারা ইতিপূর্বে দীর্ঘ ১২ বৎসর মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য পরিচয়ে মসজিদের স্থিত সম্পদ লুটপাট, আয-ব্যয়ের স্বচ্ছ হিসাব না দিয়ে স্বেচ্ছাসারিতার পরিচয় দিয়ে ধ্বংসের ধারপ্রান্তে নিয়ে যায় উক্ত মসজিদ। মসজিদের স্থিত জমির নামজারী খতিয়ানে আপত্তি, উন্নয়ন কাজে বাঁধা দান সহ বহুমূখী মসজিদ বিরোধ ঘটনার সংঘটিত করছে। উক্ত স্বার্থান্বেষী মহলের মসজিদ বিরোধী নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বর্তমান কমিটি। দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০০৪ সালে মসজিদ পরিচালনা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে যাদের নাম পাওয়া যায়, তৎমধ্যে সভাপতি উখিয়ার ঘাট ল্যান্ড কাস্টমস কর্মকর্তা, সহ-সভাপতি শামশুল আলম সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ করিম, সদস্য যথাক্রমে- কবির আহামদ, মোহাম্মদ আলম, মোঃ জাফর আলম সর্দার (ঘুমধুম), হাকিম আলী, আবু ছিদ্দিক, হাছন শরীফ কালু, ছৈয়দ আকবর, মতিউর রহমান ও মাহবুব আলী। তৎমধ্যে মাহবুব আলী ও মোহাম্মদ করিম মারা যান। তৎমধ্যে আবদুর রহমান ও আবু ছিদ্দিক ব্যতিত অন্য কেউ মসজিদ পরিচালনায় কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলনা। পূর্বের কমিটির সংখ্যাগরিষ্ট কর্মকর্তা মসজিদ সংশ্লিষ্ট ছিলনা।
গুটিকয়েক ব্যক্তি মসজিদ পরিচালনায় দীর্ঘ ১২ বছরের মসজিদের স্থিত জমি লাগিয়তের অর্থ, মসজিদ আঙ্গিনার নারিকেল, সুপারি বিক্রির অর্থ, পুকুরের মাছ বিক্রির অর্থ, মসজিদ আঙ্গিনায় সৃজিত কয়েক শতাধিক ঘনফুটের ৫/৬ টি সেগুন গাছ কর্তন করে আত্মসাৎ, কবরস্থান পাহাড়ের বিভিন্ন প্রাজাতির গাছের কয়েক শতাধিক ফুট কাঠ আত্মসাৎ, পরাতন মসজিদ মাদ্রাসার রড, ঢেউটিন চুরি করে বিক্রি, মসজিদ আঙ্গিনায় বলাৎকারের মত অনৈতিক কাজ সংঘটিত করেছে।
মসজিদ মাদ্রাসার নামে বার্ষিক জলসায় উত্তোলিত টাকার পরিমাণ, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছায় প্রদত্ত দানকৃত টাকা সহ ১২ বছরে অন্তত ২০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছে পূর্বের কমিটি। পূর্বের কমিটির দীর্ঘ ১২ বছরের আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছ হিসাব না দেয়ায় মসজিদের নামীয় জমি-জমা ডিগ্রী প্রাপ্তির মুহুর্তে ৩ দিনের সময় বেঁধেে দিয়ে কক্সবাজার বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত পূর্ণাঙ্গ কমিটি তলব করে চলতি বছরে। তৎপ্রেক্ষিতে গত ০৪/০৮/১৬ ইং তারিখ পূর্বের কমিটির শামশুল আলমকে সভাপতি, উকিল আহাম্মদকে সাধারণ সম্পাদক ও আবুল হোসেনকে কোষাধ্যক্ষ করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। উক্ত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে জরাজীর্ণ মসজিদকে এগিয়ে নিতে মসজিদের ভিতরে বাইরে রং সহ সংস্কার করা হয়, মসজিদ ভিটার সীমানা প্রাচীর রং করা, প্রশ্রাবখানা সংস্কার, নারিকেল গাছ পরিস্কার, মসজিদের নতুন মাইক, ইউনিট ২টি,আইপিএস ক্রয়, ৮টি নতুন সিলিং ফ্যান, ¯িপ্রকার ও সাউন বক্স ক্রয়, অজু খানা সংস্কার, পুকুর সংস্কার, একটি লাশ বহনকারী হাকিয়া ষ্টীল বডি ক্রয় সহ অন্তত ১ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪ শ টাকা ব্যয় করা হয়। বর্তমানে মসজিদ পুকুর ভরাট করে জানাযার মাঠ সৃজন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টায় ৩/৪ জন লেবার নিয়ে পুকুরে মাঠ ভরাটের প্রাথমিক কাজ শুরু করা হয়। এমনি মুহুর্তে বর্তমান সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে পূর্বের কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সদস্য আবু ছিদ্দিক ও তাদের ছত্রছায়ায় থাকা কুচক্রি মহলের মোঃ খলিল, জমির উদ্দিন, জহিরুল ইসলাম সোনালী, মনির উল্লাহ, নুরুজ্জামান, আবদুল মজিদ এর নেতৃত্বে অজ্ঞাত নামা আরো ৫/৬ জন স্বশস্ত্র অবস্থায় ধারালো দা, করিচ নিয়ে মসজিদের উন্নয়ন কাজে বাধাদান করে। এতে সভাপতি সম্পাদক বাধা দিলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ভবিষ্যতে মসজিদ উন্নয়নের কাজ করিলে জানে মেরে লাশ গুম করিবে মর্মে প্রকাশে হাকাবকা করে। ইতিপূর্বে মসজিদের নামীয় জমির নামজারী খতিয়ানে দৃর্বত্তরা আপত্তি পত্র দিয়ে নামজারী খতিয়ানে বাধা প্রদান করে। উল্লেখিত বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গতকাল ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিনের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বর্তমান মসজিদ কমিটির সভাপতি শামশুল আলম সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক উকিল আহাম্মদ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কে নির্দেশ দেন। জানতে চাইলে, উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল খায়ের জানান, মসজিদের ব্যাপারে কেউ দাপট ঘিরি দেখাইলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।