উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম রত্না- জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাইন্যাশিয়া সংযোগ সড়কের উপর নিমির্ত রেজু ব্রীজটির সংযোগ সড়ক ধ্বসেন দীর্ঘ দিন পার হলেও সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে ১৫ হাজার জনগোষ্টীর চলাচলের এক মাত্র সড়কের দুর্দশা আর দুর্ভোগের শেষ হচ্ছে না। সম্প্রতি আচমকা বৃষ্টিতে আবারও ধ্বসে পড়ে সংযোগ ব্রীজের এপ্রোচ।
জানা যায়, জালিয়াপালং ইউনিয়নের পূর্ব পাইন্যাশিয়া বড়ুয়া পাড়া এলাকায় ২০০৪ সালে এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে ২৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৬৫ মিটার দীর্ঘ ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। তবে গাইডওয়ালের বরাদ্দ না থাকায় ২০১৫ সালে বর্ষায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে এপ্রোচ সড়কের মাটি সরে যাওয়ার ফলে ২০ মিটার দীর্ঘ পথ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে এপ্রোচ সড়কটি বাঁশ, গাছ ও বালির বস্তা ফেলে চলাচলের কোনমতে ব্যবস্থা করা হয়। ঝূকিপূর্ণ ব্রীজটি উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাঈন উদ্দিনসহ উপজেলা প্রকোশলী মোঃ সুমন মাহমুদ, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশান অফিসার পরিদর্শন করে যান। এছাড়াও গ্রামবাসী প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের ফলস্বরুপ কক্সবাজার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এমএ ছিদ্দিক ২০১৬ সালে পরিদর্শন করে ব্রিজটি গুণগত মান যাচাই করে ঝুঁকিপূর্ণ মন্তব্য করে অবিলম্বে সংযোগ নির্মাণের পরামর্শ দেন বলে ও জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রত্নাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম রত্না- জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাইন্ন্যাশীয়া সংযোগ সড়কের উপর নিমির্ত ব্রীজটির এপ্রোচ সড়কের মাটি সরে যাওয়ার দীর্ঘ পথটি সম্প্রতি আবারো অল্প বৃষ্টিতে চলাচলের পথটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সাধারণ জনগণের চলাচলের জন্য জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বরাদ্দকৃত ৪ লাখ টাকা দিয়ে সংস্কার করে সড়কটি আবারো সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও দেখা গেছে পাইন্যাশিয়া সড়কের এক পাশ রেজুখালের ভূগর্ভে চলে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এপ্রোচ সড়কটির মাটি সরে যাওয়ার এতো দিনে ও সংস্কার কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় তারা চরম ভাবে হতাশ। আবারো কাঠের সংযোগ ধ্বসের পর ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক সংস্কার করা হলে ও কালবৈশাখী ঝড়ের স্রোতে আবারো বিলীন হয়ে যাবে ব্রীজটি। তারা আরো জানান, ব্রিজের ওপারে পিনজিরকুল, ঘোনারপাড়া, উত্তরকুল, পূর্ব পাইন্যাশিয়া, বড়ুয়া পাড়া, পশ্চিম পাইন্যাশিয়া, দক্ষিণ পাইন্যাশিয়া, তুতুরবিল, রাজাপালং ইউনিয়নের একাংশের মানুষ সহ প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ও স্কুল, কলেজ, মাদরাসাগামী অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী এ ব্রিজ ব্যবহারের মাধ্যমে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছে। উক্ত ব্রীজের এপ্রোচ বা সংস্কারের বিষয়ে একাধিক বার দপ্তরে দপ্তরে আবেদনের পর ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন প্রকার উদ্যোগ গ্রহন না করায় স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
স্থানীয় পূর্ব পাইন্যাশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম বলেন, সংস্কারকৃত ব্রীজের এপ্রোচটি আবারো বর্ষার ঢলে ধ্বসে পড়তে পারে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসা -যাওয়া করছে প্রতিনিয়ত। ব্রীজটি আবারো ধ্বসে পড়লে উভয় পাড়ের যোগাযোগ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
স্থানীয় জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন জানান, বৃহত্তর জনপদ জালিয়াপালং ইউনিয়নের বড়ুয়াপাড়া সহ হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ব্রীজ। ২০১৫ সালের দিকে ব্রীজটি বন্যায় ধ্বসে পড়ে ফলে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অবিলম্বে সরকারী ভাবে ব্রীজটি সংস্কার একান্ত জরুরী।
এই ব্যাপারে জালিয়াপালং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, পশ্চিম রত্না- পাইন্যাশিয়া সংযোগ ফুটব্রীজ টি এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে হলে ও সম্প্রতি অল্প বৃষ্টিতে আবারো ধ্বসে পড়লে জনগণের দুঃখ দুর্দশা লাঘবের জন্য ইউনিয়নে পরিষদ কতৃক ৪ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ দিয়ে আবারো সংস্কার করে দিয়েছি। ব্রীজটি সংস্কারে আপাতত কোন সরকারী বরাদ্দ নেই। তবে তিনি দাবী জানান, জালিয়াপালংয়ের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রাণের দাবীতে পরিণত হওয়া ব্রীজটি সংস্কারে উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং এপ্রোচ সড়কটি ঠিকিয়ে রাখতে ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক সবধরনের সহায়তা করা হবে।
সংস্কার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, ইতিমধ্যে ব্রীজটি সংস্কারের বরাদ্দের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে চিঠি দিয়েছি। বরাদ্দের বিষয়টি একটা পর্যায়ের মধ্যে রয়েছে। বরাদ্দ দেওয়া হলেই এলজিইডি’র ব্রীজটির ধ্বসে যাওয়া অংশ সংস্কার করা হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।