উখিয়া-টেকনাফ সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার জরিপ ২ বছর আগে সম্পন্ন হলেও সরকারের হাতে নেওয়া এ প্রকল্প থমকে আছে। সরকারের ধীর নীতির কারণে আলোর মূখ দেখছেনা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের জনসাধারণ। উখিয়ার পাশ্ববর্তী সীমান্তের মৈত্রী সড়কের কাজ পুরোদমে শুরু হওয়ায় সীমান্ত এলাকার জনসাধারণের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যতা দেখা দিলেও এখানকার সড়কের ৪ লেনের প্রকল্পের কাজ লাল ফিতায় আটকা পড়ায় অনেককে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, সড়কটি সম্প্রসারিত হয়ে ৪ লেন করা হলে এশিয়া মহাদেশের অর্থনৈতিক ও বার্নিজ্যিক চেহারা পাল্টে যেতে পারে। ব্যবসা বার্নিজ্যের দ্বার উম্মোচন হতে পারে। সাধারণ মানুষের আর্থিক সামাজিক অগ্রগতির পরিবর্তন হতে পারে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত- মিয়ানমার ও চীন বা বিআইএমসি এর মধ্যে আঞ্চলিক কানেকটিভিটি গড়ে তোলার কাজ চলছে পুরোদমে। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা এ কানেকটিভিটি গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার নিজ উদ্যোগে তাদের অংশে প্রাথমিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কটি ৪ লেনে রুপান্তরিত হলে শুধু কক্সবাজার নয় পুরোদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রবৃদ্ধি প্রসারিত হওয়ার পাশা-পাশি জনগণের আর্থিক সামাজিক উন্নয়ন সহ পর্যটন শিল্পের সমৃদ্ধ ও অবকাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তন বয়ে আনবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবকাঠামো সম্প্রসারণের জরিপ কাজ প্রায় চুড়ান্ত করেছে। এর অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ টি ব্রীজ, কালভাট পূনঃনির্মাণ ও সড়ক উন্নয়নের কাজ ইতিপূর্বে সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ সময় এডিবির নিযুক্ত কনসালটেন্সি ফার্মের প্রকৌশলীগণ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার, কক্সবাজার লিংকরোড থেকে উখিয়া হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত মহাসড়ক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদেশী পরামর্শকের মাধ্যমে জরিপ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এডিবির অর্থায়নে সুইডেন্ট ভিত্তিক ১ টি এবং বাংলাদেশী ১টি কনসালটেন্সি ফার্ম যৌথভাবে সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার কারিগরি সমীক্ষা জরিপ চালাচ্ছে। সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে সাব রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপ্ররটরী ফ্যাসিলিটি প্যাকেজ-২ এর প্রকল্পের আওতায় এটি আঞ্চলিক কানেকটিভিটির মাধ্যমে মিয়ানমারের সাথে সংযুক্ত হবে। এছাড়াও সড়কের দুই পাশে ক্ষতিগ্রস্থ জায়গার মালিক, দোকান মালিকদেরকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও আশ্বাস দেওয়া হয় উক্ত সভায়।
সূত্রে জানা গেছে, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের নিযুক্ত হাইফাব ইন্টারন্যাশনাল এবি-সুইডেন্ট মুল পরামর্শক এবং এসোসিয়েটস ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনসাল লিঃ উপ-পরামর্শক হিসেবে সড়ক উন্নয়নের কারিগরি সমীক্ষা জরিপ কাজ প্রায় ২ বছর পূর্বে শেষ হয়েছে। জরিপদলের লোকজনের তথ্য অনুযায়ী কক্সবাজার লিংকরোড থেকে টেকনাফ জিরো মাইলেজ পর্যন্ত বৃদ্ধমান সড়কের উভয় দিক থেকে ৭০ ফুট ব্যাসার্ধ অনুযায়ী সমীক্ষা জরিপ চালানো হয়েছে। এতে লিংরোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮৯ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে সিংহভাগ দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও ধর্মী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সমীক্ষার মধ্যে পড়েছে। অধিকাংশ সরকারী অধিগ্রহণকৃত, খাস ও বনভুমির উপর এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। সমীক্ষা দলের দেওয়া তথ্য মতে জানা গেছে, উক্ত প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, কক্সবাজার লিংকরোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে সড়ক, কালভাট, ব্রীজ, পুর্নঃনির্মাণ ও বাঁক গুলো সোজা ও প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কক্সবাজার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এডিবির অর্থায়নে ও মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রীয় ভাবে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক উন্নীত করার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের ৪ লেনের কাজ আরম্ভ করার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সীমান্তে সড়ক নির্মাণ, কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ, শাহ পরীর দ্বীপ বেড়ি বাধ ও সাবরাং এসক্লোসিভ টুরিষ্ট জোন বাস্তবায়নের পর কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের ৪ লেনের কাজ শুরু করবেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।