কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দীর্ঘসূত্রিতায় ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়োজিত ঠিকাদারকে কার্যাদেশে দেওয়া সময় সীমা ইতিমধ্যে পার হয়ে গেলেও এখনো ৩০ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। দীর্ঘ ৭-৮ মাস ধরে মন্থর গতিতে কাজ চালানোর ফলে ধূলো-বালি, নির্মাণ সামগ্রী এলোমেলা ভাবে রাখায় লেখা-পড়া বিঘিœত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিংকু বড়–য়া, বাবুল বড়–য়া, ইকবাল হাছান সহ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, গত বছর বর্ষার পূর্বে ঠিকাদার কর্তৃক স্কুল ভবন নির্মানের কাজ শুরু করে। ভবনের বেইসের মাটি, নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্য আনা রড, বালি, পাথর সহ অন্যান্য সামগ্রী স্কুলের পুরো আঙ্গিনা জুড়ে রাখা হয়েছে। স্কুলের শহীদ মিনারের সামনে এসব নির্মাণ সামগ্রী স্তুপ করে রাখায় গত ২১ ফেব্র“য়ারী সহ জাতীয় দিবস সমূহে নানা কর্মসূচী পালন করা যায়নি। তা ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় দৈনন্দিন এ্যাসেস্বলি ক্লাস করা সম্ভব না হওয়ায় বিদ্যালয়ের বারান্দায় তা করতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে। তাদের ক্ষোভ দীর্ঘ ১০ মাস ধরে ঠিকাদার যে ভাবে কাজ করছে তাতে আগামী আরো এক বছরেও কাজ সম্পন্ন হবে কি না সন্দেহ রয়েছে। উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, কক্সবাজার শিক্ষা প্রকৌশলী অফিস থেকে ঠিকাদার রেজাউল করিমকে গত বছরের ১৫ জুন ২৭০ দিন বা ৯ মাসের সময় সীমা দিয়ে দ্বিতল বিশিষ্ট প্রায় ৬৪ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে স্কুল ভবন নিমার্ণের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ইতি মধ্যে কার্যাদেশের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে কিন্তু বেইস ঢালাই, কিছু কলাম ঢালাই ছাড়া কাজের আর কোন অগ্রগতি নেই।
বিদ্যলয় ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য বখতিয়ার আহমদ বলেন, বেইসম্যান্ট ও কলাম ঢালাই কাজে নির্দিষ্ট পরিমাপের কম ঢালাই করা, অপরিচ্ছন্ন পাথর-বালি ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর ও বিদ্যালয় ও স্থানীয় লোকজনের পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণের কাজটি যাতে দ্রুত শেষ হয় সে ব্যাপারে সহযোগিতাও করা হচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদার ও তদারকি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা, অনিয়ম ও গাফেলতির কারণে কাজের সন্তোষ জনক অগ্রগতি হচ্ছে না। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। এসব ব্যাপারে কক্সবাজারের শিক্ষা প্রকৌশল অফিসকে একাধিক বার পত্র দিয়ে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী নূরুর হক খান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভবন নির্মাণের অজুহাতে মাসের পর মাস বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্টু পরিবেশ বিঘিœত করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এব্যাপারে তেমন কোন দায়-দায়িত্ব আছে বলে মনে হয় না। উক্ত কাজের ঠিকাদার রেজাউল করিম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী চলমান কাজের বিল পেমেন্ট না হওয়ায় কাজের অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে কক্সবাজার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সমীর কুমার রজক দাশের ফোনে একাধিকবার রিং করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।