স্বামী, শাশুড়-শাশুড়ি ও ননদের অত্যচার নির্যাতনে উখিয়ার এক গৃহবধু প্রায় দেড় মাস ধরে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যৌতুক লোভী স্বামীর অমানষিক নির্যাতনে দেড় বছরের এক শিশু কন্যাকে নিয়ে অত্যান্ত মানবেতর জীবন যাপন করছে বেঞ্জু বড়–য়া (২১)। এঘটনায় স্বামীর উপর ক্ষুব্দ বেঞ্জু বড়–য়া কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে স্বামী সবুজ বড়–য়া, শাশুড়- বকুল বড়–য়া, শাশুড়ী- যশোধা বড়–য়া, ননদ- বাপ্পী বড়–য়ার বিরোদ্ধে গত ১৬ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি উখিয়া থানায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের অপেক্ষায় রয়েছে।
জানা গেছে, উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ফনি ভুষন বড়–য়া কন্যা বেঞ্জু বড়–য়ার সাথে পার্শ্ববর্তী রতœা পালং ইউনিয়নের ফৈজা বাপের পাড়া, ভালুকিয়া গ্রামের বকুল বড়–য়ার ছেলে সবুজ বড়–য়ার বৌদ্ধ ধর্মীয় বিধান মতে সামাজিক ভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের এক পর্যায়ে স্বামীর ঘরে বেঞ্জু কিছু দিন সুখের কাটলেও নারী লোভী ও পরকীয়া আসক্ত সবুজ বড়–য়া দিন দিন নানা উপায়ে (ছুতা) খোঁজে অত্যচার, নির্যাতন শুরু করে। নানা অঘটনের মধ্যে দিয়ে বেঞ্জু বড়–য়ার সংসার জীবন ইতি মধ্যে দেড় বছর পার হতেই তাদের ওরষে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়।
এদিকে যৌতুক ও নারী লোভী পাষান্ডস্বামী সবুজ বড়–য়া বেঞ্জুকে তার দরিদ্র পিতা ফনি ভুষন বড়–য়ার নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য দিনের পর দিন শারিরিক ও মানসিক ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। অসহায় অবলা বেঞ্জু পিতার অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে পারবে না বলে স্বামীকে জানিয়ে দেন। এঘটনার পর স্বামী সবুজ বড়–য়া পরকিয়া আসক্ত হয়ে বেঞ্জু বড়–য়ার উপর অত্যচারের মাত্রা দিন দিন বাড়িয়ে দেন। এসব অত্যাচার, নির্যাতন ও শাশুড়-শাশুড়ি ও ননদের বিশ্রী ও অশ্রব্য ভাষার আক্রমন সহ্য করতে না পেরে গত ১৫-০৭-২০১৫ইং হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে স্বামী সবুজ বড়–য়ার বিরোদ্ধে পরকিয়া আসক্তের অভিযোগ এনে একটি শালিস দায়ের করেন। স্বামী সবুজ বড়–য়া স্থানীয় গণ্য মান্য ব্যাক্তিবর্গের বিচার অমান্য করে। ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বার মনজুর আলম উক্ত বিচারের একটি শালিসি রোয়েদাদ প্রদান করেন বেঞ্জুকে। এঘটনার শেষ হতে না হতেই বেঞ্জু বড়–য়াকে দফায় দফায় যৌতুকের দাবীতে মারধর করতে থাকে। গত ১৬/১১/১৬ইং সবুজ বড়–য়া, বকুল বড়–য়া, যোশোধা বড়–য়া ও বাপ্পি বড়–য়ার বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ১১(গ)/৩০ ধারা মোতাবেক একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্তের জন্য উখিয়া থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে বলে থানা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে।
বেঞ্জু বড়–য়া বলেন, পরকিয়া আসক্ত ও দূ:চরিত্র স্বামী সবুজ বড়–য়া অত্যচার নির্যাতনের পরেও আমার দরিদ্র পিতার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ করেন। আমি অসহায় হয়ে নিরবে এতদিন মুখবুঝে অনেক কিছু সহ্য করেছি। আমি স্ত্রী নির্যাতনকারী নারী লোভী স্বামী সবুজের শাস্তির দাবী করছি।
উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল খায়ের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মামলাটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।