কক্সবাজারের উখিয়ায় অসহায়-অবলা এক মহিলার বসত ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার ২ মাস পার হলেও এখনো কাংখিত ন্যায় বিচার পায়নি। প্রতিনিয়ত পাগলের মত বিচারের আশায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, থানা ও আদালতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। কিন্তু এত কিছুর পরও অসহায় দরিদ্র এ মহিলার আকুতি কেউ শুনছেন না। গত ২৪ ফেব্র“য়ারী রাত ৯ টায় উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের বটতলী কোণারপাড়া গ্রামের গোলাম হোসেনের স্ত্রী খোরশিদা বেগম (৪৬) এর বসত ঘরে ইয়াবার একটি বড় চালানের মজুদ করতে করতে চাইলে এসময় ওই মহিলা বাঁধা দিলে একই এলাকার চিহ্নিত দালাল, ভূমিদস্যু, মানবপাচারকারী, ছিনতাইকারী ও ইয়াবা ব্যবসায়ী আলী আকবর (৩৫) কোরবান আলী (২৫), আবু মুছা (২২), মোঃ বাবুল (২৫), আজম (২৫) হাকিম আলীর (৫৩) নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী পরিকল্পিত ভাবে বসত ঘর ভাংচুর ও হামলা চালালে মা,মেয়ে সহ অন্তত ৫ জন গুরুতর আহত হয়। আহতদের মধ্যে পারভিন আক্তার (২৪), নাছির উদ্দিন (৩০), কালু মিয়া (৭৫), দিলোয়ারা বেগম (৩২) চিকিৎসাধীন রয়েছে। এসময় ইয়াবা পাচারকারী সন্ত্রাসী আলী আকবর ও তার সহযোগিরা ওই মহিলার বসত ঘর থেকে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ঘরে থাকা ১টি খাট, ১টি টেবিল, ১টি আলনা, ২টি দরজা সহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে। এছাড়া খোরশিদার কন্যা পারভিন আক্তারের ব্যাগ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা ১ ভরি ১টি স্বর্ণের চেইন ৩২ হাজার টাকার মূল্যের স্বর্ণালংকার লুট করে নেয় আলী আকবর। বর্তমানে অসহায় খোরশিদা বসত ঘর ছেড়ে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অন্য জনের ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৫ দিনের মাথায় অসহায় খোরশিদা কোন রকম সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে। পর দিন এ ঘটনায় চিহ্নিত ইয়াবা পাচারকারী আলী আকবরকে প্রধান আসামী করে ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। উখিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান বিষয়টি আমলে নিয়ে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক কাজী হাসানকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন। দীর্ঘ ১ মাস ঘটনা তদন্তের নামে এএসআই হাসান রহস্যজনক কারণে কালক্ষেপন করেন। এ সময় ওই মহিলা খোরশিদার নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা উৎকোচও নেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে খোরশিদা দারোগা হাসানের নিকট গেলে তিনি আদালতে আশ্রয় নেওয়ার কথা বলে দায়িত্ব এড়িয়ে যান। বর্তমানে অসহায় খোরশিদা অভিযোগটি পুলিশ কর্মকর্তা মামলা হিসেবে রুজু না করায় স্থানীয় জনসাধারণ পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দিন দিন আস্থা ও বিশ্বাস হারাতে বসেছে। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে অর্থ যোগাড় করা দুঃসাধ্য হওয়ার কারণে অসহায় খোরশিদা বেগমের বিচারটি কোন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও থানা পুলিশ অভিযোগের বিষয়টি কেউ সুরাহ করছে না। এতে করে ইয়াবা পাচারকারী আলী আকবরের সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমকির মুখে বসত ঘর ছেড়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে। এদিকে তার প্রশ্ন, দেশের জনগণের প্রতি দরদ ও আন্তরিকতা না থাকলে সাধারণ জনগণ বার বার প্রতারিত ও হয়রানী শিকার হয়। স্থানীয়রা অসহায় খোরশিদার বসত ঘর ফিরিয়ে দেওয়া সহ ইয়াবা পাচারকারী আলী আকবরের সন্ত্রাসী বাহিনীর লুটকৃত প্রায় লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে জনসাধারণকে স্বস্তি দেওয়ার দাবী জানান। উখিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেন কালক্ষেপন করা হয়েছে তা তদন্ত করে অসহায় মহিলার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ সব সময় আন্তরিক।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।