উখিয়া উপজেলার সর্বত্র বেপরোয়াভাবে চলছে ব্যাটারিচালিত টমটম, অটোরিকশা। এতে এক দিকে যেমন সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে বিদ্যুতের অপচয়ের ফলে লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিগত ছয় মাসে উপজেলায় টমটম দুর্ঘটনায় নারী শিশুসহ ছয়জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে বলে সুত্রে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার টেকনাফ মহাসড়ক সহ উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, উপসড়কে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত টমটম। অতিরিক্ত যাত্রী বহন, যত্রতত্র চলাচল পাশাপাশি পার্কিং করে যানজটের সৃষ্টি করার কারণে অসহনীয় দূর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। অদক্ষ এবং ছিটকে পড়া শিশু কিশোর দিয়ে চালিত টমটমে প্রতিনিয়ত ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। উপজেলার বিভিন্ন ব্যস্ততম এলাকায় ও স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সামনে যাত্রী উঠানামা, এলোপাতাড়ী পার্কিং কোমলমতি ছাত্র/ছাত্রীদের নিরাপদ চলাচলে বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক স্কুল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। এদিকে গত ডিসেম্বরে টমটম দুর্ঘটনায় শিশুসহ তিনজন নিহত, নভেম্বরে পিএসসি পরীক্ষার্থী, অক্টোবরে নারীসহ প্রথম শ্রেনীর স্কুল ছাত্র নিহত হয়। এছাড়া ও কলেজ ছাত্রীসহ ভয়বাহ দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়েছে।
উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা কলেজের ছাত্রী তানজিনা আক্তার বলেন, কলেজে যাতায়াতে টমটম সহজলভ্য হলেও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করায় বিভিন্ন সময় তাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। অদক্ষ চালকের কারণে ওড়না পেছিয়ে আহত হওয়ার ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। তাছাড়া প্রায় সময় সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়।
অন্যদিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়ে বিদ্যুৎচালিত অটোরিক্সা ও উপজেলার আনাছে কানাছে ছড়িয়ে পড়ছে লক্ষণীয়ভাবে। ব্যাটারিচালিত টমটম অটোরিকশায় উখিয়ার জন্য বরাদ্দকৃত বিদ্যুৎ অপচয় করা হলে ও এই ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না উখিয়া পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। ফলস্বরুপ চোরাই সংযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ চুরির হিডিক পড়েছে।
কোটবাজার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ছালামত উল্লাহ জানান, অবৈধ টমটম আর অটোরিকশার উতপাত অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ চুরির কারণে বিদ্যুৎ নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। সন্ধ্যার পর লোডশেডিং অনেকটাই ব্যাটারিচালিত টমটম, অটোরিকশার কারণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উখিয়া-কক্সবাজার সড়কের সী লাইন পরিবহনের চালক শাহ আলম জানান, অদক্ষ চালক দ্বারা টমটম আর অটোরিকশা চালানোয় সড়কের নিয়ম কানুন সম্বন্ধে তাদের ধারণা নেই। সড়কের উপরে যত্রতত্র ভাবে তাদের অবস্থান, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ফলে অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হয় এবং মহাসড়কে সীলাইন সহ অনান্য চালকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক টমটম, অটোরিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি। এদিকে অবৈধ ব্যাটারী চালিত টমটমও অটোরিক্সার দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভূক্তভোগীরা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।