২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

উখিয়ায় হ্যাচারী বর্জ্যে দুষিত সমুদ্রের পানিঃ মারা যাচ্ছে সামুদ্রিক প্রাণি


কক্সবাজারের কলাতলী হতে উখিয়ার মনখালী পর্যন্ত অর্ধশতাধিক হ্যাচারী রয়েছে। যার থেকে বঙ্গোপসাগেরে প্রতিদিন ছাড়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ লিটার বিভিন্ন ক্যামিকেল মিশ্রিত পানি। যার ফলে সাগরের পানি দুষিত হয়ে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে সামুদ্রিক পানি সহ উপকূলে বসবাসকারী ২০হাজারের অধিক পরিবার। এই দুষিত পানির বসবাসকারী সামুদ্রিক প্রাণি কাচিম ও ডলফিলের চরে এসে মারা পড়ছে। এতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সাগর তীরবর্তি এলাকায় বসবাসকারী পরিবার গুলো আরো হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী সচেতন মহল।
পর্যটন নগরী সমুদ্রবর্তী উপকুলীয় এলাকা ইনানী ও সোনার পাড়া হ্যাচারী জোনে বসবাসকারী লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কক্সবাজারের কলাতলী থেকে সোনারপাড়া ইনানী পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ছোট বড় মৎস্য পোনা হ্যাচারী রয়েছে। এসব হ্যাচারী গুলো থেকে প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টন দুষিত পানি সাগরে ছড়ানো হচ্ছে। যেসব হ্যাচারী থেকে দুষিত পানি সাগরে ছড়াচ্ছে তার মধ্যে কলাতলীর নিরিবিলি হ্যাচারী, সোনার পাড়ার সৌদিয়া হ্যাচারী, এস আলম হ্যাচারী, ডায়মন্ড হ্যাচারী, এস আর হ্যাচারী, মর্ডান হ্যাচারী, এস,কে হ্যাচারী, মক্কা হ্যাচারী, গ্রামীণ হ্যাচারী, বেঙ্গল বে হ্যাচারী, রেড়িয়ান হ্যাচারী, আল আসরাফ হ্যাচারী, বৈশালী হ্যাচারী, প্যাসিপিক হ্যাচারী, বোরাক হ্যাচারী , সী কুইন হ্যাচারী, সোনালী হ্যাচারী , ইনানী হ্যাচারী, সুপার হ্যাচারী, এ আর সি হ্যাচারী, সততা হ্যাচার। এই হ্যাচারী গুলোতে দেখা গেছে প্রতিটি হ্যাচারী থেকে ২ টি বড় বড় পাইপ ফেলানো হয়েছে বঙ্গোপসাগরে । এসব পাইপ এর মাধ্যমে হ্যাচারী গুলোতে সংগ্রহ করা হয় নোনা পানি। কারণ এসব হ্যাচারী গুলোর উৎপাদিত চিংড়ি পোনা সংরক্ষন করা যায় সমুদ্রের এই নোনা পানি দিয়ে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে বোরাক, এস আলম , সৌদিয়া হ্যাচারীর একাধিক কর্মচারী জানান, প্রতিদিন একেকটি হ্যাচারীতে ৩শ থেকে ৪শ টন নোনা পানি সংগ্রহ করা হয়। আর বিভিন্ন রাসায়নিক জাতীয় ক্যামিকেল মিশানোর এই পানি আবার দিনের শেষে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়। এ হিসেবে প্রতিদিন একটি হ্যাচারী থেকে ৪ শ টন পানি সমুদ্রে ফেলা হলে ৪২ টি হ্যাচারী থেকে প্রতিদিন সমুদ্রে বিষাক্ত পানি ফেলা হচ্ছে ১৬ হাজার ৮শ টন। প্রতিদিন বিপুল পরিমান বিষাক্ত পানি সমুদ্রে ছড়ানোর ফলে একদিকে যেমন সমুদ্রে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সামুদ্রিক প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে, অপরদিকে বিষাক্ত পানিগুলো হ্যাচারী জোনের আশপাশ এলাকায় মারাত্বক প্রাকৃতিক দুষনের সৃষ্টি করছে। স্থানীয় জেলে ছৈয়দ আহাম্মদ সাংবাদিকদে অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন এভাবে বিপুল পরিমান বিষাক্ত পানি সাগরে যাওয়ার ফলে সাগরের ২/৩ কিলোমিটারের মধ্যে পানিগুলো বিষাক্ত হয়ে গেছে। তাছাড়া এভাবে বিষাক্ত রাসায়নিক যুক্ত পানি সাগর ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে এলাকায় ছড়ার কারনে স্থানীয় জমিজমা গুলোতে কোন চাষাবাদ হচ্ছেনা। স্থানীয় এলাকাবাসি বলেন, আজ থেকে ২/৩ বছর আগে এখানে নলকূপ থেকে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যেত কিন্তু ইদানিং নলকূপ থেকে আর বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে যেসমস্ত নলকূপ গুলো স্থাপন করা হয়েছে তার থেকে লবনাক্ত পানি আর দুষিত পানি পাওয়া গেছে। তারা অচিরেই এ ব্যাপারে প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সর্দার শরিফুল ইসলাম জানান, যে সমস্ত হ্যাচারী থেকে সমুদ্র দুষিত পাণি ছাড়া হচ্ছে ওই সমস্ত হ্যাচারীর মালিক কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে। এরপর ও যদি কেমিক্যাল যুক্ত পাণি সমুদ্র ছেড়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এই সব হ্যাচারীর বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি এসময় সামুদ্রিক প্রাণি মারা যাওয়া কথা স্বীকার করে বলেন, গত রোববার কক্সবাজার কলাতলি পয়েন্টে ১০ কেজি ওজনের একটি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। তবে কি কারনে মারা গেছে তা বুঝা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে বার্ধক্য জনিত রোগে ডলফিনটি মারা গেছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।