পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহফুজুর রহমান ইয়াবা পাচারের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাতে ১৬ সহযোগীর নাম প্রকাশসহ ফাঁস করে দিয়েছেন ইয়াবা সিন্ডিকেটের নানা তথ্য। ছয় লাখ ৮০ হাজার ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ শনিবার ধরা পড়েছিলেন তিনি।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, গতকাল দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত মাহফুজুর রহমানের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ৮ পৃষ্ঠার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মাহফুজুর ইয়াবা পাচারের বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। কিভাবে ইয়াবা সংগ্রহ করেন, কাদের কাছে ইয়াবা বিক্রি করেন, কারা কিভাবে তাঁকে সহযোগিতা করেন সেসব তথ্য রয়েছে জবানবন্দিতে। ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকী আসামির এ জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।
এদিকে মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া গাড়িচালক জাবেদ দায় স্বীকার না করায় পুলিশ অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুনরায় রিমান্ড আবেদন করে। আদালত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় গিয়াসউদ্দিন নামের আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ফেনী মডেল থানা পুলিশ।
সূত্র জানিয়েছে, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এএসআই মাহফুজুর রহমান ইয়াবা সিন্ডিকেটে জড়িত পুলিশ সদস্যদের নাম প্রকাশ করে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য অনুসারে টেকনাফ থেকে ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করেন কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক বেলাল এবং হাইওয়ে পুলিশের কুমিরা ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আশিকুর রহমান। তাঁরা ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করে মাহফুজুর রহমানকে দেন। এরপর মাহফুজ সেগুলো ঢাকায় নিয়ে গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তর করেন। ইয়াবাগুলো কিভাবে পাচার হয়, কাদের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়, সেসব তথ্যও রয়েছে জবানবন্দিতে। ইয়াবা পাচারচক্রের সদস্য এসআই বেলাল ও এসআই আশিকুর রহমান, কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক বেলাল, কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক আশিকুর রহমান, আশিকের বড় ভাই, ছালেহ, জাফর, গিয়াস, অ্যাডভোকেট জাকির, কাসেম, তোফাজ্জল, মোতালেব, সেলিম, শাহীন, গোবিন্দ, গাড়িচালক জাবেদসহ কার কী ভূমিকা তা জবানবন্দিতে উঠে এসেছে।
চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি সুত্রে প্রকাশ, ইয়াবা লেনদের হিসেবে হচ্ছে এই রমক, তোফাজ্জল ১ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার টাকা, কাশেম ৪৩ লাখ ৪০ হাজার তিন’শ টাকা, আজাদ ৬০ লাখ টাকা, মামা গিয়াস ৬৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা, গিয়াস ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, গোরিন্দ্র দাদা ৪০ লাখ, সেলিম ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, শাহিন ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা, এ্যাড জাকির ৬৩ লাখ টাকা,এসআই বিল্লাহ ১ কেটি ৭৫ লাখ টাকা, মোতালেব (হাইকোর্ট মুহুরী) ২০ কোটি ৩৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা, এসআই আমিরের বন্দু ৪১ লাখ টাকা , মামা হান্নান ৭১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, এসআই আশি (চট্টগ্রাম) ৪৬ লাখ টাকা লেনদেন করেন। দেলেেদনের পরিমাণ দাড়ায় ২৮ কোটি ৯৪ লাখ ০৩০০০ হাজার টাকা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।