চলতি বছরের এপ্রিলেই ভারত-বাংলাদেশ রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন পালক যোগ হতে চলেছে। আগামী ৮ এপ্রিল কলকাতা থেকে খুলনার মধ্যে চালু হতে চলেছে একটি নতুন মৈত্রী এক্সপ্রেস। সেক্ষেত্রে ৭-১০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালেই এই নতুন ট্রেনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হতে পারে।
বর্তমানে কলকাতা থেকে ঢাকা পর্যন্ত যে মৈত্রী এক্সপ্রেসটি চলাচল করে সেটি যায় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গেদে সীমান্ত দিয়ে। ওই ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ট্রেনের সংখ্যা তিন দিন থেকে বাড়িয়ে সপ্তাহে চার দিন করা হয়েছে। আর গেদের সেই সাফল্যের কথা মাথায় রেখেই কলকাতা থেকে খুলনা পর্যন্ত নতুন এই মৈত্রী ট্রেন চালু হতে চলেছে। কলকাতা স্টেশন থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে খুলনা পর্যন্ত যাতায়াত করবে এই মৈত্রী এক্সপ্রেস। প্রস্তাবিত ওই রুটটিকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উপযুক্ত করে তুলতে ইতিমধ্যেই কাজ প্রায় শেষের পথে।
শুক্রবারই পেট্রাপোল সীমান্ত পরিদর্শনে এসে প্রস্তাবিত এই নতুন ট্রেন পরিষেবার শুরুর কথা জানান ভারতের পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এস এন আগরওয়াল। তিনি বলেন ‘আগামী ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের দিক থেকে প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেনটির চলাচল শুরু হবে এবং তা ভারতে এসে পৌঁছবে’। যদিও সপ্তাহে কত দিন এই ট্রেন চলাচল করবে সেবিষয়ে কিছু জানাতে চান নি তিনি। তবে প্রথম অবস্থায় সপ্তাহে এক দিন বা দুই দিন নতুন রুটে এই ট্রেন চলাচল করবে, পরে যাত্রী চাহিদা মতো ট্রেনের পরিষেবার দিনও বাড়ানো হবে বলে রেল সূত্রে খবর।
ভারতের পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এস এন আগরওয়ালের সঙ্গেই এদিন ওই পথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের বিষয়, নিরাপত্তা সহ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেন পূর্ব রেলের ডিভিশনাল ম্যানেজার বাসুদেব পান্ডা, রেলওয়ে পুলিশ ফোর্স (আরপিএফ)-এর ডিআইজি এস কে সাহানি প্রমুখ।
রেল সূত্রে খবর, সম্প্রতি কলকাতা-খুলনা নতুন মৈত্রী ট্রেন চলাচলের বিষয়ে দুই দেশের রেল মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা একটি বৈঠকে বসেন। গত ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে যৌথ ঘোষণাপত্রেও এই নতুন মৈত্রী এক্সপ্রেসের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
রেল সূত্রে আরও খবর, ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়েই শিয়ালদহ স্টেশন থেকে খুলনা ও যশোরের মধ্যে ট্রেন চলাচল করতো। কিন্তু এরপর থেকে দীর্ঘ ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে এই পথে যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। যদিও ২০০১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতের তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জির উদ্যোগে এই রেল পথ দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।