২১ এপ্রিল, ২০২৫ | ৮ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

এলো খুশির ঈদ

জাতীয় ডেস্কঃ রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’, একমাস সিয়াম সাধনার পর বুধবার (৫ জুন) দেশে উদযাপিত হচ্ছে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। সকালে ঈদের জামাত দিয়ে শুরু হয়েছে আনন্দ উৎসব। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। দেশবাসীকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। এছাড়া, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

php glass
মঙ্গলবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার খবর না পেয়ে প্রথমে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ঈদ উদযাপনের ঘোষণা আসে। পরে, মধ্যরাতে দ্বিতীয় দফা বৈঠক করে কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীতে চাঁদ দেখার কথা জানিয়ে বুধবার (৫ জুন) ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি শেখ মো. আব্দুল্লাহ।

ঈদ আনন্দে হিংসা-বিদ্বেষ ঘুঁচে দেশবাসীর সম্প্রীতির বন্ধনে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ঈদুল ফিতর মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা ও সংযম পালনের পর অপার খুশি আর আনন্দের বার্তা নিয়ে আমাদের মধ্যে সমাগত পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ সবার মধ্যে গড়ে তোলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন।

ইসলামকে শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম অভিহিত করে তিনি বলেন, এখানে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, কূপমণ্ডুকতার স্থান নেই। মানবিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক সহাবস্থান, পরমসহিষ্ণুতা ও সাম্যসহ বিশ্বজনীন কল্যাণকে ইসলাম ধারণ করে। ইসলামের এ সুমহান বার্তা ও আদর্শ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।

‘ইসলামের মর্মার্থ ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য মানবতার মুক্তির দিশারী হিসেবে দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ুক, বিশ্ব ভরে উঠুক শান্তি আর সৌহার্দ্যে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসী ও বিশ্বের সব মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে তার বাণীতে বলেছেন, ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। হিংসা ও হানাহানি ভুলে মানুষ সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জীবনে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি, সংযম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন পরিব্যাপ্তি লাভ করুক- এটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা। হাসি-খুশি ও ঈদের অনাবিল আনন্দে প্রতিটি মানুষের জীবন পূর্ণতায় ভরে উঠুক।

এদিকে, বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক খচিত ব্যানার দিয়ে সাজানো হচ্ছে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক, মোড় ও দ্বীপগুলো। উন্নতমানের খাবার সরবরাহ করা হবে বিভিন্ন হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, ভবঘুরে কেন্দ্র ও এতিমখানায়। সরকারি-বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিওতে প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠান। টিভি চ্যানেলগুলো ইতোমধ্যে পাঁচ থেকে সাত দিনের বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। জাতীয় সংবাদপত্রগুলোও প্রকাশ করেছে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যা, ঈদ ম্যাগাজিন।

প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত হবে ঢাকায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায়। সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে এ জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেবেন। এবার ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়ার শায়খুল হাদিস মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুযযামান।

ঈদের সকালে বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। আবহাওয়া বিরূপ থাকলে ঈদের প্রধান জামাত হবে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। সেখানে এবারও পাঁচটি জামাত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়। এরপর পর্যায়ক্রমে সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং পৌনে ১১টায় পরের জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় ঈদগাহে যারা গাড়ি নিয়ে নামাজ পড়তে যাবেন, তাদের গাড়ি রাখার জন্য মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ভেতরে, শিল্প একাডেমির সামনের রাস্তা, দোয়েল চত্বরে ব্যারিকেডের বাইরে, ফজলুল হক হলের ব্যারিকেডের বাইরে ও প্রেসক্লাব লিংক রোড ব্যারিকেডের বাইরে স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদের জামাত হবে সকাল ৮টায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল ৮টা ও ৯টায় দু’টি জামাত হবে।

জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ৩০২টি স্থানে এবার ঈদের জামাত হবে। অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে ২২৮টি জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে জামাত হবে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা এসব জামাতের ব্যবস্থাপনায় থাকবেন।

ঈদ জামাত ঘিরে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঈদগাহ ময়দানে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় জায়নামাজ ও ছাতা ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে না নিতে মুসল্লিদের পরামর্শ দিয়েছে ঢাকার মহানগর পুলিশ।

ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সোমবার ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, সকালে নামাজে আসা সবাইকে তিন ধাপে তল্লাশি শেষে ঈদগাহে প্রবেশ করতে হবে। ঈদের জামাতে সুষ্পষ্ট কোনো নিরাপত্তার হুমকি না থাকলেও, সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার।

ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে এক মাস ধরে। রাজধানীসহ দেশের শপিং সেন্টারগুলোতে রমজান আসার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে কেনাকাটা। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবার-পরিজনের জন্য ঈদ উপহার নিয়ে গ্রামমুখো নগরবাসী। দেশের প্রায় সব মুসলিম পরিবারেই ঈদ সামনে রেখে নতুন পোশাক কেনা হয়। সামর্থ্য অনুযায়ী স্বজনদের জন্য নতুন পোশাক কেনার পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারেই সেমাইসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের আয়োজন করা হয়।

এরই মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কর্মস্থল ছেড়ে স্বজনদের কাছে ফিরে গেছেন লাখ লাখ মানুষ। ঈদ ও শবে কদরের ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে পাঁচ দিনের ছুটিতে সপ্তাহের প্রথম দিকেই রাজধানী ছেড়েছেন অনেকে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।