২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

এসএসসি পরীক্ষায় থাকছে না ৪ বিষয়

174345_133মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান বাড়াতে ১৫ দফা সুপারিশ করেছেন শিক্ষাবিদরা। পরীক্ষার সময় ও শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমাতে চারটি বিষয় এসএসসি পরীক্ষায় অন্তর্ভূক্ত না করে বিদ্যালয় পর্যায়ে ধারাবাহিক মূল্যায়নের আওতায় আনা হবে। শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা, চারু ও কারুকলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলোকে পাবলিক পরীক্ষায় অন্তর্ভূক্ত না করে বিদ্যালয়ে নিচু শ্রেণীতে ধারাবাহিক সেগুলো পড়ানো হবে।

সম্প্রতি দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে দুই দিনের এক কর্মশালায় এসব সুপারিশ উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

আজ সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব সুপারিশের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাবলিক পরীক্ষার সময় চাপ কমাতে শিক্ষাবিদরা বিষয় কমানোর সুপারিশ করেছেন। সব শিক্ষাবোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নে পাবলিক পরীক্ষা নেয়ার সুপারিশ এসেছে। পাশাপাশি পরীক্ষার এমসিকিউ ও সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরির জন্য আইটেম ব্যাংক তৈরি, বইপড়া দিবস পালন, যথাসময়ে শিক্ষকদের টিচার্স গাইড সরবারহেরও সুপারিশ করেছেন শিক্ষাবিদরা।

দুটি সুপারিশ বাস্তবায়নে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কবে থেকে তা এখনই বলা যাবে না। সবাইকে নিয়ে উপযুক্ত সময়ে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। শিক্ষাবিদদের সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে সব বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে। এ ছাড়া ২০১৮ সাল থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক পৌঁছানো হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

এসএসসিতে কয়েকটি বিষয় এসএসসি পরীক্ষা থেকে বাদ দেয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিষয়গুলোর গুরুত্ব কমাচ্ছি না। এ বিষয়গুলো যে প্রয়োজন রয়েছে তা অস্বীকার করছি না। সম্পূর্ণ গুরুত্ব দিয়েই রাখব কিন্তু মূল্যায়ন ভিন্নভাবে করা সম্ভব বলে আমরা মনে করছি। আমাদের পরীক্ষার সময় কমে আসবে। এতে ক্লাসটা বেশি নেয়া যাবে। শিক্ষাবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, এ বিষয়গুলো যাতে স্কুল পর্যায়ে যথাযথভাবে পড়ানো হয় এবং শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় সেজন্য কার্যকর পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হবে। শারীরিক শিক্ষা, চারু ও কারুকলার বিষয়ে প্রতিযোগীতার ও কৃতিত্বের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।

মন্ত্রী নাহিদ জানান, এমসিকিউ এবং সৃজনশীল প্রশ্নের মান উন্নয়নের জন্য আইটেম ব্যাংক তৈরি করা হবে। প্রশ্নের সাথে নমুনা কিছু উত্তর যাচাই-বাছাই করে সরবরাহ করা বা উন্মুক্ত রাখা যেতে পারে, যা শিক্ষার্থীদের উত্তর দিতে সহায়ক হবে। যশোর শিক্ষা বোর্ডের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে আইটেম ব্যাংক প্রণয়নে একটি ধারণাপত্র প্রণয়ন করে বাংলাদেশ শিক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বিইডিইউ) অবিলম্বে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সব শিক্ষককে প্রশ্নপত্র প্রণয়নে ও উত্তরপত্র মূল্যায়নে আবশ্যিকভাবে সম্পৃক্ত হতে হবে বলে সুপারিশ করেছেন শিক্ষাবিদরা।

শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বলেন, নবম ও দশম শ্রেণীর নির্বাচিত কয়েকটি পাঠ্যবই পরিমার্জন করে সুখপাঠ্য, আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য করা হবে। এজন্য দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং লেখকদের সমন্বয়ে একটি প্যানেল তৈরি করা হবে। এ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শ্রেণী শিক্ষকদের অন্তর্ভূক্ত করা হবে। পরিমার্জনের জন্য একটি টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্লান তৈরি করতে হবে যাতে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারির আগেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক পৌঁছানো নিশ্চিত হয়। ২০১২ সালের কারিকুলাম পর্যালোচনা করার জন্য দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অন্যান্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে বলে সুপারিশ এসেছে বলে জানান তিনি।

শিক্ষাবিদদের অন্যান্য সুপারিশ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী জানান, স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উৎসাহিত করতে তা কো-কারিকুলাম একটিভিটির (সহ-শিক্ষা কার্যক্রম) অন্তর্ভূক্ত করা যায়। বছরের একদিনকে বই পড়া দিবস হিসেবে পালন করার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। শিক্ষকদের পাঠদানে সহায়তার জন্য উপযুক্ত টিচার্স গাইড যথাসময়ে প্রণয়ন ও মানোন্নয়ন করা প্রয়োজন।

সুপারিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পরীক্ষা পদ্ধতি বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে ‘র-স্কোর’ এর পরিবর্তে ‘স্ট্যান্ডারাইজ স্কোর’ ব্যবহার করার বিষয়টি বিবেচনা করা অপরিহার্য। তবে বিষয়টি নতুন বলে এটি নিয়ে আরো বিস্তারিত পর্যালোচনা প্রয়োজন। সুপারিশ অনুযায়ী, ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফল নিয়ে বাংলাদেশ শিক্ষা উন্নয়ন ইউনিট ‘স্ট্যান্ডারাইজ স্কোর’ এর মাধ্যমে একটি পরীক্ষামূলক ফল তৈরি করবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, মিডিয়া ও সব অংশীজনের সাথে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময় শুরু করা যেতে পারে। শিক্ষার মানোন্নয়নের অপরিহার্য শর্ত হিসেবে শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃদ্ধি করতে হবে।

মাধ্যমিক মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গত ২৫ ও ২৬ নভেম্বর কক্সবাজারে শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি কর্মশালা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই কর্মশালা থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন শিক্ষামন্ত্রী। ওই কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইনসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও বোর্ড চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।