শহরের প্রধান সড়কে ময়লা আর্বজনা ও কাদামাটি সরিয়ে নিচ্ছে পৌরসভা। পাশাপাশি চলতি সপ্তাহেই অবৈধ নালা দখলকারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে পৌর পরিষদ। আর উচ্ছেদ অভিযানে জনগনের সহযোগীতা কামনা করেছে প্রশাসন।
সূত্র জানায়, ফ্লাগুনের শেষ রোববার কক্সবাজারে ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এই সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের রাস্তাঘাট, নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি শেষ হলেও কাদামাটির দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে শহরবাসীকে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সকলেই। পরিত্রানের আশায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন স্ট্যাটাস। অনেকেই কক্সবাজার পৌরসভাকে দায়ী করে মন্তব্য করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই ঝড়ে নড়েচড়ে বসেছেন কক্সবাজার পৌরসভার কর্তাব্যক্তিরা। গতকাল বিকালেই পৌর পরিষদ এক জরুরী বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক থেকেই সিদ্ধান্ত হয় শহরের প্রধান সড়কে জমে থাকা ময়লা আর্বজনা পরিষ্কার করার । এছাড়া চলতি সপ্তাহেই নালার উপর স্থাপিত অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ কাজ শুরু করার।
বৈঠক শেষে গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই কক্সবাজার পৌরসভা শহরে শুরু করেছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। দুটি স্কেভেলেটর ও চারটি ট্রাক যোগে শহরের প্রধান সড়কে জমা হওয়া ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করে। সারারাত ধরেই চলে সেই কাজ।
কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টিতেই শহরে হাটু পরিমান পানি জমে যায়। বৃষ্টির পরে কাদামাটিতে ভরে যায় শহরের প্রধান সড়ক। পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে এর দায়ভার আমি এড়াতে পারি না । কিন্তু পৌরসভারও অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও সেই সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে চেষ্টা করছি শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে ।’
মেয়র আরো বলেন, ‘জলাবদ্ধতার জন্য শুধু পৌরসভা দায়ী নয়। এর জন্য দায়ী সমাজের অনেক রাঘব বোয়ালরা। যারা প্রতিনিয়ত পাহাড় কাটছেন তারা যেমন দায়ী । তেমনি দায়ী সমাজের নালা খেকোরা। কাজেই যারা শুধু পৌরসভার সমালোচনা করছেন তাদের কাছে অনুরোধ নালা খেকো ও পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন ।’
তিনি আরো বলেন, চলতি সপ্তাহেই শহরের নালা দখলকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবে পৌরসভা। দুজন নির্বাহিী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে এই অভিযান চলবে।
শহরকে জলাবদ্ধতা মুক্ত করতে তিনি ওই উচ্ছেদে জনগনকে পাশে পাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
পৌরসভার একটি সূত্র জানায়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শহরের নালাগুলো দখল মুক্ত করা হবে। তবে উচ্ছেদ শুরু হবে বড় দখলবাজদের বিরুদ্ধে। এজন্য একটি সংক্ষিপ্ত তালিকাও করেছে পৌরসভা। বাজারঘাটা এবিসি রোডের চাউলবাজারের পেশকার পাড়ার বেশক’টি স্থাপনা রয়েছে ওই তালিকায়। আর বাকি দখলদারদেরও পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হবে। ইউজিপি-৩ প্রকল্পের কাজ শুরু হলে বাকি স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হবে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, একটি জনপদকে সুন্দর ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হলে সর্বপ্রথম জনগনকে সচেতন হতে হয়। তাদেরকেই এগিয়ে আসতে হয়। এ কারণেই চলতি সপ্তাহের উচ্ছেদ অভিযানে শহরবাসীকে প্রশাসনের পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।