পর্যটন শহর কক্সবাজারকে আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারকে পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তোলা হলে এখানকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। তিনি বলেন, ‘এত সুন্দর সমুদ্র সৈকত, কিন্তু কক্সবাজার সবসময় অবহেলিত ছিল। এটাকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তোলা আমাদের কর্তব্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজার নিয়ে তার স্বপ্ন বাল্যকাল থেকে। আর এ স্বপ্ন সৃষ্টি করেছিলেন তার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৬২ ও ১৯৬৪ সালে ছোট্টকালে পিতা-মাতার সাথে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ করতে এসেছিলাম। তখন আমার পিতা সৌন্দর্যময় সমুদ্র সৈকতকে নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা বলতেন। এরপর সমুদ্র সৈকতকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে আমার ভেতরে স্বপ্ন তৈরি হয়।’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন হয়ে গেছে। এখন কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কও চার লেন করা হবে খুবই দ্রুত সময়ে মধ্যে। এ লক্ষ্যে যাচাই-বাছাইয়ের কাজও শুরু হয়েছে।
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বোয়িং চলাচলের উপযোগী হয়েছে, এখানে প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে সরকারি ফ্লাইট আসবে বলেও তিনি জানান।
কক্সবাজারকে অবহেলিত ও অনুন্নত এলাকা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ের পর কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছিলাম। তখন দেখেছি এ এলাকার জীবনমান কত খারাপ। যোগাযোগ ব্যবস্থার ভয়াবহতা। বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সৈকত কক্সবাজার। এর সৌন্দর্য আরো আকর্ষণীয় করতে যা যা করার দরকার তাই করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রেজুখালী ব্রিজ নির্মাণ, সৈকতের কলাতলী থেকে দুই কিলোমিটার ওয়ার্ক ওয়ে নির্মাণের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে কেবল পর্যটনের বিকাশ নয়, সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হবে।
সড়কটি নির্মাণের জন্য সেনা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে পাহাড় ধসে নিহত ছয় সেনা সদস্যের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছে মেরিন ড্রাইভ হয়ে ইনানী পৌঁছেন। এ সময় সেনাবাহিনীর চৌকস দলের সালাম গ্রহণ করেন। আদিবাসী পরিবেশিত নৃত্যে স্বাগত জানানো হয় শেখ হাসিনাকে। পরে সেখানেই ২৮ কিলোমিটার পয়েন্টে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশারফ হোসেন, বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সেনাবাহিনীর প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন মোহাম্মদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরারসহ সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কক্সবাজার বিমানবন্দরে বোয়িং বিমানের বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। সেখানে তিনি কক্সবাজারের আরো পাঁচটি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং আটটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।