পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়া অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে কক্সবাজারবাসীর জন্য। ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম।ফিশারী ঘাটে অবস্থানরত এফবি আমেনা ফিশিং ট্রলারের মাঝি আবদুল গণি (৫০) জানিয়েছেন, সাগরে জলদস্যুতা আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর অনুকূল নেই। কাল বৈশাখীর ঝড়ো হাওয়ায় ফিশিং ট্রলারগুলো গভীর সমুদ্রে যেতে পারছে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে সাগরে ইলিশের দেখাও মিলছে কম। আবার অল্প সরবরাহেও অনেকে মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ী মহলের।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকালে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিনের মতো মৎস্য ব্যবসায়ী, জেলে ও শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে মাছের সংখ্যা কম। পুরো মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র জুড়ে খুবই কম সংখ্যক ইলিশ চোখে পড়ে।
শহরের ফিশারী ঘাট এলাকার আড়তদার মোস্তাক আহমদ (৪৭) জানান, বিগত বছরগুলোতে বেশ কয়েক মণ ইলিশ তাদের কাছে মজুদ থাকত। কিন্তু এবার বিক্রি করার জন্যও পাচ্ছেন না।
কক্সবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মাছ সরবরাহকারী ব্যবসায়ী আলিম উদ্দিন (৩৯) জানান, ৭০ থেকে একশ ইলিশ দিয়ে কি ঢাকায় চালান পাঠানো যায়? ইলিশ নেই। পাশাপাশি অন্য প্রজাতির মাছও কম।
মৎস্য ব্যবসায়ী রফিকুল আলম (৪০) জানান, পয়লা বৈশাখ’কে ঘিরে প্রতি বছর কিছু ব্যবসা হয়। তবে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী ইলিশ থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন। কিন্তু এ বছর আসলেই ইলিশ কম। যা আছে তাও অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে না।
ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুল করিম (৩০) জানান, বড় আকারের ইলিশের কেজি পাঁচশ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচশ এবং মাঝারি আকারেরগুলো চারশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মঙ্গলবার ও বুধবার শহরের বাহারছড়া বাজার, বড় বাজার, কানাইয়্যা বাজার, বউ বাজারসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরেও পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা মেলেনি। ইলিশের চরম সংকটে ১৪ এপ্রিল বাঙ্গালীর নতুন বছরে পান্তা ইলিশ খাওয়া অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কবি সিরাজুল হক সিরাজ জানান, পহেলা বৈশাখে পান্তা ইলিশ খাওয়া যদিও বাঙ্গালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য নয়। তারপরও পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ থাকলে কেউ খেলে অসুবিধা নেই। ইলিশ কম হলে বেশী দামে কিনতে হবে এমন কোনো যুক্তিও নেই আমাদের।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।