আশ্রয়হীন প্রবীণদের পাশে দাঁড়াতে কক্সবাজার শহরের উপকন্ঠে লিংরোড বিসিক এলাকায় সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হবে অসহায় প্রবীণদের আশ্রয় কেন্দ্র ‘শান্তিনিবাস’। এখানে ৫০ থেকে ৬০ জন বয়স্ক লোকবাস করবেন।
কক্সবাজার জেলার মহিয়সি নারী হিসেবে পরিচিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়রে স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নারী আসন-৫০ এর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব খোরশেদ আরা হক এমপি ওই আশ্রয় কেন্দ্র অবহেলিত বৃদ্ধদের নিবাস গড়ে তোলার মহতী উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে ঝিলংজা মৌজার লিংকরোড বিসিক এলাকায় সরকারী ভাবে এক একর জমি বরাদ্দ দেয়ার আবেদন করা হয়েছে। জমি বরাদ্দের প্রায় সকল প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্নে পথে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা খুরশেদ আরা হক এমপি। এই বৃদ্ধাশ্রম বাস্তবায়ন করবে দূর্যোগ ও পূর্ণবাসন মন্ত্রণালয়। জমি অধিগ্রহণের পর বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের আমার প্রত্যাশা ছিলো অসহায় বৃদ্ধদের জন্য কক্সবাজারে একটি শান্তি নিবাস বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার। অনেকের জন্য বৃদ্ধনিবাস আসলেই অতি প্রয়োজনীয় বিকল্প। অনেক বৃদ্ধ আছেন যার সন্তান নেই, নেই কোনো নিকটাত্মীয় যার কাছে তিনি শেষ দিনগুলো কাটাতে পারেন। এদের জন্য বৃদ্ধনিবাস হবে এক চমৎকার ব্যবস্থা। থাকা-খাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে, শেষ জীবনের অবসর সময়টাকে উপভোগের সুযোগ করে দেয়া হবে বৃদ্ধাশ্রমে।
বৃদ্ধাশ্রম হবে অবহেলিত বৃদ্ধদের জন্য শেষ আশ্রয়। তাদের সারা জীবনের অবদানের যথার্থ স্বীকৃতি, শেষ সময়ের সম্মান ও নিরাপত্তা দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই গড়ে তোলা হবে বৃদ্ধাশ্রম। এখানে তারা নির্ভাবনায়, সম্মানের সঙ্গে, আনন্দের সঙ্গে বাকি দিনগুলো কাটাতে পারেন। এই বৃদ্ধাশ্রমে চিকিৎসারও সুন্দর ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, নারী ও পুরুষ মিলে ২০০ জন থাকার সুব্যবস্থা করা হবে। এখানে যারা থাকবেন আলাদা ভাবে ১’শ বৃদ্ধা ও ১’শ বৃদ্ধ। তারা সবাই মিলে একটা নতুন পরিবার তৈরি করে নিবেন। বৃদ্ধরা সমবয়সীদের সঙ্গে হেসে-খেলে, স্মৃতিচারণ করে তাদের সময়টা ভালোই কেটে যাবে। আবার প্রয়োজনমতো নিজের পরিবারের সঙ্গেও দেখা-সাক্ষাৎ করেন, নানা পালা-পার্বণে সন্তান নাতি-নাতনিদের সঙ্গে আনন্দমুখর সময় কাটাতে পারবেন বৃদ্ধরা।
এমপি খোরশেদ আরা হক আরো বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযোদ্ধা, দুস্থ ও স্বামী পরিত্যক্তাসহ অসহায়দের ভাতা বাড়িয়েছে, বেড়েছে সুবিধাভোগীর সংখ্যাও।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, প্রতিবন্ধী, এতিম আর অসহায় বৃদ্ধদের জন্য শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা বলয় তোলা হবে। এতিমরা যেমন অসহায়, অনেক বৃদ্ধকেও দেখার কেউ নেই। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দু’ধরনের অসহায় মানুষের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ‘শান্তিনিবাস প্রকল্পের’ উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু জোট সরকার তা বন্ধ করে দেয়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিটি জেলাতেই আবার তা চালু করতে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
খোরশেদ আরা হক বলেন, কক্সবাজার জেলার আটটি উপজেলার অসহায়দের জন্য বিনামুল্যে প্রতিজনকে দুই কাটা করে সরকারী খাস জমি বরাদ্দ চেয়েছি। অসহায়দের মাথাগুজার ঠাঁই করে দিতে আটটি উপজেলায় অসহায় পরিবারগুলোর তালিকাও তৈরি করে তা সংসদে উপস্থাপন করেছি।
জেলার তিন’শ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, দুস্থ ও স্বামী পরিত্যক্তাদের মাথা গুজার সৃব্যবস্থা ও নারী শিক্ষার উন্নয়নে জেলায় নারীদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করারও দাবী জানিয়েছেন তিনি।
কক্সবাজার সদর ভুমি সহকারী কর্মকর্তা সাহেদ উদ্দিন জানান, বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার জন্য ঝিলংজা মৌজার লিংকরোড বিসিক এলাকায় ১ একর জমি বরাদ্দের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্নের পথে। এটা সহসাই সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।