বিশেষ প্রতিবেদক ঃ কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদলের করা গুলিতে বিদ্ধ হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন দোকান মালিক। শুক্রবার ভোররাত তিনটার দিকে ঈদগাঁও ফরিদ আহমদ ডিগ্রি কলেজ গেইট সংলগ্ন ইউনুছ স্টোরে এ দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছে।
ডাকাতদল নগদ সাড়ে তিনলাখ টাকা, বিকাশ ও ইজিলোড়ের তিনটি মোবাইল ও মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সদর মডেল থানার ওসি ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এতে জড়িত সন্দেহে দোকান কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ। সবাই গুলিবিদ্ধকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দৌঁড়ের উপর থাকায় তথ্যটি সারাদিন অপ্রচারিত ছিল।
আহত ব্যবসায়ী হুমায়ুন ইসলাম (২৬) ঈদগাঁওর পশ্চিম ভাদিতলার গোমাতলী পাড়ার আবদুল হাকিমের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগ এবং কমিউনিটি পুলিশ নেতা।
আটক কর্মচারী রায়হান (১৪) কলেজ গেইট এলাকার নুরুল আবছারের ছেলে।
হুমায়ুনের ভাই সোহেল জানান, ১০-১৫ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল দোকানের গ্রিল খুলতে বলে ধাক্কাছিল। এসময় হুমায়ুন ঘুমে অচেতন থাকলেও কর্মচারী রায়হান ডাকাতদের কথামতে ভেতর থেকে সকল তালা খুলে দেয়। ডাকাতদল দোকানে ঢুকে ঘুমন্ত হুমায়ুনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। একটি গুলি তার বুকে ও অপর গুলি কোমরের নিচে বিদ্ধ হয়। শুধু গুলি করে তারা ক্ষান্ত হয়নি। উপর্যপূরী কুপানো হয়েছে তাকে। এরপর তারা রক্ষিত মালামাল তছনছ করে নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা, বিকাশ ও ইজিলোডের মোবাইলসহ ৩টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়। যাবার সময় আরো কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলির পাশাপাশি মরিচের গুঁড়া নিক্ষেপ করে কলেজের পাহাড় হয়ে দক্ষিণে চলে যায়। হুমায়ুনের শোর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে পরিবারে খবর দিলে স্বজনরা এসে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
হাসপাতালে সাথে থাকা হুমায়ূনের ছোট ভাই ইব্রাহিম জানান, ভাইয়ের কোমরের নীচ থেকে ২টি গুলি বের করা হয়েছে। বুকে আরো একটি গুলি রয়ে গেছে। সেটা অপারেশন করে বের করতে হবে। মাথায় উপর্যুপরী কোপের আঘাতগুলো সেলাই করা হয়েছে। তার অবস্থা এখনো শংকামুক্ত নয় বলে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা।
হুমায়ুনের পরিবারের দাবী, দোকান কর্মচারী রায়হান দেড় মাস যাবত কর্মরত থাকলেও কোনদিন দোকানে থাকেনি। বৃহস্পতিবার দোকানে থাকার ইচ্ছা পোষন করলে সরল বিশ^াসে হুমায়ুন তাকে দোকানে রাখে।
খবর পেয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রনজিত বড়–য়া। তিনি বলেন, ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরতদের দ্রæত জড়িতদের বের করতে তৎপর হতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া দোকান মালিকের উপর এত ধকল গেলেও কর্মচারি অক্ষত থাকা এবং শক্ত গ্রীলের ভেতর থেকে দেয়া তালা ডাকাতদের কথামতো খুলে দেয়ায় ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রায়হানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জড়িতদের সন্ধান ও চিহ্নিতকরণে বিভিন্ন স্থানে সোর্স নিয়োগের পাশাপাশি পুলিশও কাজ করছে।
এদিকে, শক্তগ্রিল থাকার পরও দুর্ধর্ষ এ ডাকাতির ঘটনায় এলাকার অন্যদোকান গুলোর মালিকদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। ###
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।