কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ডিসি সাহেবের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন উখিয়ার শামশু বলী। গতকাল শনিবার প্রতিযোগিতার ৬০তম আসরে সমাপণী দিনে রামুর জোয়ারিনালার জহির বলীকে ২৪ মিনিট ২০ সেকেন্ডে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে নেন উখিয়া উপজেলার শামশু বলী। তবে অন্যান্য বারে দিদার বলী অংশ নিলেও এবারে চট্রগ্রামে জব্বারের বলী খেলায় দিদার বলী অংশ নেয়ায় কক্সবাজার ডিসি সাহেবের বলী খেলার চ্যাম্পিয়নশীপ সহজে অর্জন করতে পারে শামশু বলী। জয়ের পর উখিয়ার শামশু বলী জানান, প্রত্যেকবার আশা নিয়ে আসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য। কিন্তু কোন বার পূরণ হয়নি। কারন সিনিয়র বলীদের কাছে হারতে হয়েছে। এজন্য সারা বছর পরিশ্রম করে নিজেকে তৈরি করি। এ বছর আল্লাহ আশা পূরণ করেছে।
কক্সবাজারের ডিসি সাহেবের বলী খেলায় অংশ নিতে বিভিন্ন বয়সের বলীরা আসেন বাঁধ ভাঙ্গা স্রোতের মতো। জেলার টেকনাফ, উখিয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, কুতুবদিয়া, বান্দরবান, রামু, পেকুয়া, সহ বিভিন্ন স্থান থেকে সকাল থেকে বলীরা সারি বেঁধে মাঠে প্রবেশ করেন।
গত ২৪ এপ্রিল শুরু হওয়া দুই দিন ব্যাপী কক্সবাজার ডিসি সাহেবের বলী খেলা শেষ হয়েছে গতকাল ২৫ এপ্রিল। তবে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে বৈশাখী মেলা।
ঐতিহ্যবাহি এ বলী খেলায় দর্শকে কানায় কানায় পূর্ণ হয় কক্সবাজার নুহুল আমিন স্টেডিয়ামটি। এছাড়া স্টেডিয়াম মাঠের আশপাশের সবগুলো ভবনের ছাদে অবস্থান নেন কৌতুহলী দর্শক। ঢাকঢোল বাজিয়ে বলীখেলার মঞ্চের চারপাশে ঘুরছিল বাদক দল। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢোলের তালে তালে শুরু হয় ডিসি সাহেবের বলী খেলা। খেলা পরিচালনা করেন কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন কবীর। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরুস্কার বিতরণ করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন। কক্সবাজার জেলা সহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ১৮ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ৫২ জন বলী প্রতিযোগিতার প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ডে অংশ নেন। এদিকে খেলা শেষে বিজয়ী শামশু বলী ও জহির বলীর হাতে নগদ অর্থ এবং ট্রফি তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি একে আহমদ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম চৌধুরী, অরুপ বড়–য়া তপু সহ রাজনৈতিক ব্যাক্তি ও ক্রীড়ামোদিরা।
এদিকে প্রতিবারের মতো এবারও বৈশাখী মেলায় হরেক রকম পসরা নিয়ে ভিড় করেছেন দোকানিরা। স্টেডিয়ামের দক্ষিন পাশ থেকে উত্তর পাশ পর্যন্ত চুড়ি, ফিতা, রঙ্গিন সুতা, হাতের কাঁকন, নাকের নোলক, মাটির ব্যাংক, ঝাড়ু, খেলনা, ঢোল, বাঁশি, বাঁশ ও বেতের নানা তৈজসপত্র, কাঠের পুতুল, প্লাস্টিক, মুড়ি মুড়কি, লাড্ডুসহ নানা সামগ্রী।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।