খাল, নদী, নালা ও পানি নিষ্কাশনের স্থান দখল হয়ে যাওয়ায় কক্সবাজারে বন্যার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। এখন সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার শহর। পৌর এলাকায় গুরুত্বপুর্ণ নালাগুলো দখল মুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোর চেষ্টা চালানো হলেও এখনো উদ্ধার হয়নি। যার ফলে শহরের পানি নিস্কাসন অবস্থা আগের মতই রয়ে গেছে। এ ছাড়াও বাঁকখালী নদীসহ জেলা বিভিন্ন নদী ও পানি চলাচলের স্থান দখল হয়ে যাওয়ায় টানা বৃষ্টি হলে বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘয়াতি হবে এমন আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন।
কক্সবাজারে বন্যার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। সবর্ত্র দখলের মহোৎসব চলায় এমটি হচ্ছে বলে জানালেন স্থানীয় লোকজন। কক্সবাজার পৌর শহর ছাড়াও অন্তত ৩০টি ইউনিয়নে বন্যার ঝুঁকি বেড়েছে।
শহরের আইবিপি মাঠ এলাকার বাবুল বড়ুয়া জানিয়েছেন, এই মৌসুমে দুইবার বৃষ্টি হয়েছে এতেই পুরো বাজার ঘাটা অচল হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুম শুরু হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পানি বাঁকখালী নদীতে যাওয়ার কোন জায়গা নেই। সবকটি নালাই বন্ধ। কিছু নালা আবর্জনার কারণে বন্ধ রয়েছে আবার কিছু দখল হয়ে গেছে। বেশী ভাগ নালার উপরেই গড়ে উঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এটি শহরের অন্যতম ব্যবস্ততম এলাকা হলেও এই এলাকাটিতে যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় সে ব্যবস্থা কেউ করেনি।
শহরের নুর পাড়ার বাসিন্দা মোঃ কাজল জানিয়েছেন, এখন বাঁকখালী নদী দখল হতে-হতে শুধুমাত্র নদীর যেন অবরুদ্ধ কোন স্থানে রয়েছি। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বর্ষা মৌসুম আসলে কি হয় জানা নেই। চকরিয়ার পশ্চিম বড় ভেওলার নাজেম উদ্দিন জানিয়েছেন, বৃষ্টি হলেই দীর্ঘ মেয়াদী বন্যা হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। এখানে পানি নিস্কাসনের কোন সুযোগ রাখা হয়নি। এ ছাড়া মাতামুহুরী নদী এখন প্রায় দখল হয়ে গেছে। নদীর নিচু অংশে নদী দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য চিংড়ি প্রজেক্ট। যার ফলে পানি সাগরে নামতে না পেরে লোকালয়ে উঠে যায়। কিন্তু পানি একবার প্রবেশ করলে দীর্ঘ মেয়াদের বন্যার সৃষ্টির হয়।
চকরিয়া বদরখালী ইউনিয়নে জসিম উদ্দিন টিটু জানিয়েছেন, প্রতি বছরই বদরখালীতে বন্যা হচ্ছে। এরপরও বদরখালীকে বন্যা মুক্ত করতে কোন পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। পানি নিস্কাসনের যে স্লুইচগেইট গুলো রয়েছে এগুলোও প্রায় অচল। সন্ত্রাসি স্লুইচগেইটগুলো দখল করে নিজেদের ইচ্ছেমত ব্যবহার করছে। যার ফলে বৃষ্টি হলেই পানি বন্দী হয়ে পড়ে বদরখালীর মানুষ।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালীর কামাল হোসেন জানিয়েছেন, বিগত সময়ে যে বন্যা কক্সবাজারে হয়েছে এবার টানা বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। তৎমধ্যে রামুর অবস্থা বেশী খারাপ হতে পারে। এমন কোন খাল নেই কিংবা নালা নেই দখল করা হয়নি। যদি বর্ষা মৌসুমের আগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সমস্যার সৃষ্টি হবে।
কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান জানান, পানি নিস্কাসনের বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে। শহরে যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় সেভাবে কাজ করবে কক্সবাজার পৌরসভা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।