২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজারে মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ শুরু মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ

বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে জোরালোভাবে কাজ শুরু করেছে চকরিয়া মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ। মহাসড়কে যানজট নিরসন, অবৈধ যান বাহনোর বিরুদ্ধে অভিযান, ছিনতাই ও ডাকাতি রোধে, দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে, মাদকাসক্ত হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে এবং বেপরোয়া গতির যানবাহন শনাক্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি জোরালোভাবে কাজ শুরু করেছে। আগেও মহাসড়কে মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা চব্বিশ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করলেও, নয়া অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী যোগদানের পর এবার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরালো করা হয়েছে। ফলে গত একমাসে মালুমঘাট হাইওয়ে ফাঁড়ির আওতাধীন মহাসড়ক এলাকায় মাত্র দুটো দূর্ঘটনাটা ঘটেছে। ওই দুটি দুর্ঘটনায় চালকসহ গাড়ি আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যেই দুর্ঘটনা ও ছিনতাই প্রবণ মহাসড়কের স্পটগুলো চিহ্নিত করে দুর্ঘটনা প্রবণ বাঁক বা স্পটগুলোতে অনেক দূর থেকে দেখা যায়, এমন সাইনবোর্ড ও স্পিডব্রেকার বসানো হয়েছে। এসব জায়গায় রেকার ও অতিরিক্ত টহল পুলিশ মোতায়েন রাখাসহ অফিসার ফোর্স মিলে ৩১ সদস্য নিরলস কাজ করছেন। মাদকাসক্ত চালকদের শনাক্ত করতে ড্রাগ ডিটেক্টর আর দ্রুত গতির যানবাহন শনাক্ত করতে স্পিডগান ব্যবহার করা হচ্ছে।
এছাড়া চালক ও মালিকদের
সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করা হচ্ছে।
হাইওয়ে পুলিশের সূত্রমতে, মহাসড়কে বেপারোয়া গতি, পাল্লা দিয়ে যানবাহন চালানো, আইন ভেঙ্গে ইউটার্ন করা, ক্রটিপূর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন চালনাসহ নানা অসতর্কতার কারণে সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। আর এসব দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে নিরলস পরিশ্রম করছে মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ। চলতি মার্চ মাসে সিএনজি, টমটম, থ্রি হুইলারসহ শতাধিক যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা ও আটক করা হয়। এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বিআরটিএ অনুমোদিত মোটর ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর ও কক্সবাজার মোটর ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার পরিচালক
মো. নুরুল আমিন এর মতে, মহাসড়কে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ১০০টি ব্লাকস্পট (দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা) আছে। এসব স্পটে যানজট, দুর্ঘটনায় অধিক প্রাণহানির ঘটনা ছাড়াও ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির মতো অপরাধ সংঘটিত হয়। প্রতিযোগিতামুলক বেপরোয়া গতিতে গাড়ী চালনা, চালকদের অদক্ষতা, ওভার লোডিং, পথচারীদের অসাবধানতা কারণে প্রতিবছর সড়ক, মহাসড়কে দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষ আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেকে চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়। এদের মধ্যে বেশির ভাগ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। একটি দূর্ঘটনা একটি পরিবারের সারা জীবনের কান্না হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা গুলো চিহ্নিত করেই সর্তকতামূলক সাইন বোর্ড বাড়ানো,পরিবহন সেক্টরে চালক হেলপারদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা আরো বাড়ানো দরকার। পাশাপাশি পথচারীদেরও সচেতন করা হলে সড়কে দূর্ঘটনাটা অনেকটা কমে যাবে।
হাইওয়ে পুলিশ বলছে, অবৈধ চালকরা ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে লাইসেন্স নিয়ে থাকে। ফলে কোন পণ্যবাহী গাড়ি ছিনতাই হলে বা কোন যাত্রীবাহী যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়লে সহজেই চালকদের খুঁজে পাওয়া যায় না। কোন কোন ক্ষেত্রে গাড়ির মালিকেরও হদিস মেলে না। কারণ ভুয়া লাইসেন্সধারীরা লাইসেন্স প্রাপ্তির ফরমে সঠিক নাম ঠিকানা ব্যবহার করে না। এজন্য দুর্ঘটনাপ্রবণ স্পটগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানোর বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। যাতে দুর্ঘটনার শিকার যানবাহনের চালককে শনাক্ত করা সহজ হয়।

এছাড়া মহাসড়কের দুই পাশের ১০ মিটার পর্যন্ত সব ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদে উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু সে নির্দেশ এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে হাইওয়েতে যানজট সহনীয় পর্যায়ে আসেনি।
চকরিয়া মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন,অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে হাইওয়ে পুলিশ বেশি কাজ করছে। বিশেষ করে নতুন কোন দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত হয়নি। চিহ্নিত দুর্ঘটনাপ্রবণ স্পটগুলোতে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। সেখানে স্পিডব্রেকার দেয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক রেকার রাখা হয়। যাতে কোন যানবাহন দুর্ঘটনা পড়লে দ্রুত সরানো যায়। যানজট সৃষ্টি না হয়। রাস্তায় টহলও জোরদার করা হয়েছে। যাতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মাদকাসক্ত চালক ও দ্রুত গতির যানবাহন শনাক্ত করতে ড্রাগ ডিটেক্টর ও স্পিডগান ব্যবহার করা হচ্ছে নিয়মিত।
তিনি আরও বলেন, কঠোর আইন প্রয়োগ ছাড়াও মানবিকতা এবং আধুনিকতা দিয়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। চালক এবং মালিকদেরকে সচেতনতামূলক ব্রিফিং করা হচ্ছে নিয়মিত। কোন চালক যাতে সড়কে,
মহাসড়কে বেপারোয়া গতি, পাল্লা দিয়ে যানবাহন চালানো থেকে বিরত থাকে সে ব্যাপারে চালকদের বারবার সচেতন করা হচ্ছে।

মালুমঘাট হাইওয়ে ফাঁড়ির সকল পুলিশ সদস্যদেরকে মানবিক এবং পেশাদারিত্বের নির্দেশনা দিয়ে থাকি। জনসাধারণ এবং যানবাহন চালকরা সচেতন হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে অভিমত এই পুলিশ কর্মকর্তার।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।