একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে বাদশা মিয়া (৬৫) নামের আরো একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের হরিয়ারছড়া এলাকার বাদশার পঞ্চম স্ত্রীর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাদশা মিয়া মহেশখালী পৌরসভার দক্ষিণ পুটিবিলা দাসীমাঝির পাড়ার নজির আহমদের ছেলে। তিনি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন মহেশখালীতে রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন।
এ নিয়ে এই উপজেলা থেকে মোট ছয়জন মানবতাবিরোধী অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল মহেশখালীর ১৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এরপর পৃথক অভিযানে দুপুরে মহেশখালী জামায়াতে ইসলামীর পৌর আমির মৌলভী ওসমাণ গণিসহ (৬২) তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন- মৌলভী নুরুল ইসলাম (৭৫) ও জিন্নাত আলী ওরফে জিন্নাহ (৭২)।
এদের মধ্যে প্রথমজন ছাড়া অন্য দুইজন কক্সবাজার জেলায় তেমনভাবে পরিচিত নন। সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সম্পৃক্ত নন। মৌলভী নুরুল ইসলাম সমাজ কমিটির সর্দার ও স্থানীয় সালিশকার বলে পরিচিত। অন্যজন জিন্নাত আলী ওরফে জিন্নাহ স্থানীয় আনসার বাহিনীর সাবেক কমান্ডার ছিলেন।
মহেশখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন দত্ত খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ শুক্রবার ভোররাত তিনটার দিকে হোয়ানক ইউনিয়নের হরিয়ারছড়ায় বাদশা মিয়ার পঞ্চম স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিনের ঘরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর বাদশা মিয়াকে ভোরেই মহেশখালী থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
সুজন বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মহেশখালী উপজেলার ১৬ জন যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। সেই নির্দেশের কারণেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
তিনি বলেন, ‘বাদশা মিয়া মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজাকার বাহিনীর স্থানীয় কমান্ডার ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।’
মহেশখালী থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদেশ পেয়ে দুদিনে চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি জানান, তাদের আদালতে উপস্থাপন করা হবে। আদালতের মাধ্যমেই ঢাকায় ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে মহেশখালী থেকে সাবেক সংসদ সদস্য রশিদ আহমদ ওরফে রশিদ মিয়া এবং কক্সবাজার শহর থেকে এলডিপির জেলা সভাপতি ছালামত উল্লাহ খানকে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।