২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

কক্সবাজারে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা

কক্সবাজার উপকূলে এখন পুরোদমে চলছে শুঁটকি তৈরির কাজ। শুঁটকি তৈরিতে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার শ্রমিকরা। এখানে উৎপাদিত শুঁটকি দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি রফতানি হচ্ছে বিদেশে। প্রচলিত পদ্ধতিতে শুকানো এই শুঁটকি নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।

৮০ দশকের শুরু থেকে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক মহালসহ জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় শুঁটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই থেকে এই এলাকার শুঁটকি দেশে ব্যাপক পরিচিতি পায়। এরপর সৌদি আরব, দুবাই, হংকং ও কুয়েতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই এলাকার শুঁটকি রফতানি প্রক্রিয়া শুরু করে ব্যবসায়ীরা।

প্রায় ২৫ প্রজাতির মাছ রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি। এর মধ্যে রূপচাঁন্দা, ছুরি, কোরাল, সুরমা, লইট্ট্যা ও পোপা অন্যতম। বর্ষার কয়েকমাস ছাড়া বছরের বাকি সময়ে এখানে শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শুঁটকি তৈরি হয় শীতে। আর এ শুঁটকি মহালে কাজ করে জীবিকা পরিচালনা করেন শ্রমিকরা। যদিও ওখানে শ্রম ও বেতন নিয়ে রয়েছে তাদের নানা অভিযোগ।
কক্সবাজার নাজিরারটেক শুঁটকি মহাল ছাড়াও জেলার উপকূলীয় এলাকা কুতুবদিয়া, মহেশখালী সোনাদিয়া, গোরকঘাটা, তাজিয়াকাটা, কুতুবজোম, কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ, খুদিয়ারটেক, আলি আকবর ডেইল, অংজাখালী, পশ্চিম ধুরুং, টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ, সেন্টমার্টিন, জালিয়াপাড়া, সদর উপজেলার নাজিরারটেক, খুরুশকুল, সমিতিপাড়া ও চৌফলদণ্ডিসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় বিপুল পরিমাণ শুঁটকি উৎপাদন হয়ে থাকে।

কক্সবাজার শহরের বিশিষ্ট শুঁটকি ব্যবসায়ী ও পৌর কাউন্সিলর এসআই আক্তার কামাল, নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আতিক উল্লাহ, শুঁটকি মহালের শ্রমিক নুরুল কাদের, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, মোহাম্মদ কায়সার, সরওয়ার আলম ও শফিউল আলম শফিকসহ আরও অনেকে জানান, কক্সবাজারের নাজিরার টেকে রয়েছে প্রায় এক হাজার শুঁটকি মহাল। যেখানে প্রতি সপ্তাহে ২ শত টন শুঁটকি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। যার চাহিদা রয়েছে বিদেশেও।
তাদের ভাষ্যমতে, কক্সবাজার শহরের এডিবি হ্যাচারি থেকে নাজিরারটেক পর্যন্ত সড়ক মেরামত, অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন হলে পরিবেশবান্ধব এ মহাল সরকারি রাজস্ব খাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া কিটনাশক ঔষধ ব্যবহার বন্ধ, স্বাস্থ্য সম্মত শুঁটরি তৈরি, বর্ষা মৌসুমে শুঁটকি তৈরির প্রযুক্তি সরবরাহ এবং এখাতে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা গেলে শুঁটকি রফতানিতে অনায়াসে শত কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে।

কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০টি ট্রাক শুঁটকি ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যা স্থানীয় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি লইট্যা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, ফাইস্যা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছুরি ৭০০ থেকে ৯৫০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, ছোট পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রইস্যা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, লাক্ষা ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, মাইট্যা ৬০০ থেকে ৮০০, বড় চিংড়ি (চাগাইচা) ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও কক্সবাজারের শুঁটকি মহালের মাছের গুড়ি সারাদেশে পোল্ট্রি ফার্ম ও ফিস ফিডের জন্য সরবরাহ হয়ে থাকে।

কক্সবাজার জেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন জানান, শহরের কুতুবদিয়াপাড়ার ১৬টি মহল্লার ৪০ হাজার জেলে ও শ্রমিক এ পেশার সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকার ৫ হাজার পরিবার শুঁটকি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

প্রতি বছর ৯ মাস পর্যন্ত এ মহালে শুঁটকি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ হয়ে থাকে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।