কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে চুড়ান্তভাবে নিয়োগপত্র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে জেলার ৮ উপজেলার ২৮৬ জন ভাগ্যবান যুবক-যুবতী। আজ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনাড়ম্বও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ভাগ্যবান এসব যুবক-যুবতীর হাতে চুড়ান্ত নিয়োগপত্র তুলে দেন। নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পর এসব যুবক-যুবতী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত সম্প্রতি চাকরি এবং দক্ষতা উন্নয়ন মেলায় আবেদন গ্রহণের পর পরীক্ষা শেষে ২৮৬ জন চুড়ান্তভাবে এই নিয়োগ পেলেন। রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কর্মরত মোট ২১টি এনজিও জেলার ৮ উপজেলার ওই ২৮৬ জনকে নিয়োগ দেন।
চুড়ান্ত নিয়োগপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এনজিও সংস্থা প্রান্তিক উন্নয়ন সোসাইটি ৩ জন, পালস বাংলাদেশ ২০ জন, ইপসা ১৫ জন, কারিতাস বাংলাদেশ ১০ জন, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র ২ জন, অক্সফাম ৫ জন, কোডেক ৫ জন, কোস্ট ট্রাস্ট ৮ জন, শেড ৬ জন, মুক্তি কক্সবাজার ২৭ জন, রিসডা বাংলাদেশ ২০ জন, কেয়ার বাংলাদেশ ১৮ জন, এসআরপিভি ৯ জন, ব্র্যাক ১০৩ জন, ঢাকা আহসানিয়া মিশন ১৫ জন, বাস্তব ১ জন, মুসলিম হ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ২ জন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা ৩ জন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ৭ জন, আসিয়াব ১ জন ও এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ ৬ জনকে নিয়োগ প্রদান করে।
তন্মধ্যে উপজেলাওয়ারী উখিয়ায় ১১০ জন, টেকনাফে ১৮ জন, রামুতে ৩১ জন, সদরে ৭৪ জন, চকরিয়ায় ৩০ জন, পেকুয়ায় ৭ জন, কুতুবদিয়ায় ১ জন ও মহেশখালীতে ৮ জনকে বিভিন্ন পদে পদায়ন করা হয়। তবে দেশীয় ছাড়া বিদেশী এনজিও কোন সংস্থায় কারও চাকরি হয়নি। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ ও দীপক শর্মা দীপু।
অনুষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়া শাহ মো. ইমরান ও শেলী চৌধুরী বলেন, ‘পড়ালেখা শেষ করার পরও তাদের দীর্ঘবছর কর্মহীন তথা বেকার থাকতে হয়েছে। এই প্রথম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চাকরি এবং দক্ষতা উন্নয়ন মেলার মাধ্যমে আমরা রুটি-রুজির তথা চাকরির কর্মস্থল পেলাম। এজন্য আমরা জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট এনজিও সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞ।’
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, কোন ধরণের অভিজ্ঞতা ছাড়াই জেলার ৮ উপজেলার ২৮৬ জন নারী-পুরুষকে চাকরি দিয়েছে এনজিওগুলো। নিয়োগ পেয়ে স্ব স্ব কর্মস্থলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। করতে হবে ভাল পারফরম্যান্স। কারণ এটা দক্ষতা অর্জনের বিরাট সুযোগ। বিশেষ করে ইংরেজীতে নিজেকে ফিট করতে হবে। দক্ষতা বাড়লে প্রকল্প শেষ হলেও পুনরায় নিয়োগ মিলবে। তাছাড়া অভিজ্ঞরা অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১০০ টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ডে ২৫ টাকা স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দ থাকার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। অতি শীঘ্রই উখিয়ায় দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পর্যায়ক্রমে সবার চাকরি হবে। জেলা প্রশাসক নিয়োগ প্রাপ্তদের বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি নেগেটিভ পোস্ট দিলে কেউ তার জবাবে ১০টি পজেটিভ পোস্ট দিতে হবে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জেলা প্রশাসনের ফেসবুকে সবাই সকল তথ্য দিতে পারবেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।