সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে গত বছর লবণ চাষ সংশ্লিষ্ট প্রান্তিক চাষিসহ ব্যবসায়ীরা লাভবান হয়। ফলে, চলতি মৌসুমে আগাম লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমেছে চাষিরা। চাষাবাদে বাড়ছে জমিও। এতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে পুরো দেশের চাহিদা মেটানোর পর উদ্ধৃত্ত উৎপাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন লবণ চাষি সমিতির নেতৃবৃন্দরা। এবার কক্সবাজারের সাত ও চট্টগ্রামের এক উপজেলায় লবণ চাষের জন্য বিসিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬০ হাজার একর জমি। এ জমিতে ১৮ লাখ মেট্টিক টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে।
বিসিক সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া, রামু, সদর, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে উৎপাদিত লবণই পুরো দেশের চাহিদা মেটায়। এ আট উপজেলায় কয়েক বছর পূর্বেও শুধুমাত্র প্রাকৃতিক (সনাতন) উপায়ে লবণ উৎপাদন হতো। বর্তমানে প্রাকৃতিকের পাশাপাশি চকরিয়া,পেকুয়া, টেকনাফ, বাঁশখালীর বিভিন্ন স্থানে কৃত্রিম তাপ ধারণ করে পলিথিন পদ্ধতিতেও লবণ উৎপাদন হচ্ছে। এতে কম জমিতে উৎপাদন হচ্ছে অধিক পরিমাণ লবণ।
দেখা গেছে, চকরিয়ার বদরখালী, খুটাখালী, ডুলাহাজারা এবং পেকুয়ার মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী ইউনিয়ন ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের আংশিক এলাকার চাষীরা পুরোদমে লবণ চাষ শুরু করেছে। পক্ষকালের মধ্যেই জমি থেকে লবণ উৎপাদন হবে বলে একাধিক লবণ চাষি জানান। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চাষ শুরু করা জমি থেকে আগামি এপ্রিল পর্যন্ত টানা পাঁচ মাস লবণ উৎপাদন হবে বলে চাষিদের অভিমত।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের লবণ মৌসুমে উৎপাদিত লবণের দাম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষীরা লাভবান হয়েছিল। সরকার প্রান্তিক পর্যায়ে লবণের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ায় লবণ চাষিদের মাঝে স্বস্থি ফিরে আসে।
খুটাখালী ইউনিয়নের প্রান্তিক লবণচাষীরা জানায়, গত মৌসুমে সরকার বিদেশ থেকে লবণ আমদানি না করায় এবং সরকারিভাবে উপকূলীয় এলাকার লবণ চাষীদের বাঁচাতে লবণ নীতিমালাসহ দাম বৃদ্ধি করায় আমরা এ মৌসুমে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বেশি নিয়ে মাঠে নেমেছি।
চাষিরা আরো জানান, দীর্ঘদিন পর বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম মণপ্রতি প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এ দাম অব্যাহত থাকলে পুরোদমে লবণ উৎপাদনে আরো সক্রিয় হবেন স্থানীয় চাষিরা।
বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবছার উদ্দিন বলেন, গত মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার অধিক ৬১ হাজার একর জমিতে লবণ চাষ হয়। এবার ৬০ হাজার একর জমিতে লবণ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও জমির পরিমাণ বাড়তে পারে। চাষাবাদ পুরোদমে শুরু হলেই কি পরিমাণ জমিতে চাষ হয়েছে নিরুপন করা যাবে। দেশে লবণ চাহিদা রয়েছে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার মেট্টিক টন। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ৮ উপজেলা থেকেই লবণ উৎপাদনে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ লাখ মেট্টিক টন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।