২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচন চেয়ারম্যান পদে ভোটযুদ্ধে নামছেন চকরিয়ার দুই সালাহউদ্দিন!

salahuddin-ahmed-cip
সারাদেশের সাথে কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হচ্ছে আগামী ডিসেম্বর মাসে। সেই লক্ষ্যে অনেক আগে থেকে জেলার আট উপজেলায় এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকটা সরব হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। শহরের অভিজাত রেস্তোরা থেকে গ্রামের ছোট পানের দোকানেও শুরু হয়েছে জেলা পরিষদ নির্বাচনের আমেজ। যেখানে বেশ ক’জন মানুষ জড়ো হচ্ছে সেখানে শোভা পাচ্ছে নির্বাচনী আমেজ। জেলা পরিষদ নির্বাচনের সেই আমেজ এখন জেলার অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ এলাকা চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার জনপদে জনপদে সাধারণ জনগনের মাঝে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে অনুষ্টিতব্য এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে দুই উপজেলা থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে ভোটারদের মাঝে নানা বিশ্লেষণ আর কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। তার কারন হচ্ছে, দুই উপজেলার ভোট ব্যাংককে রূপ্ত করে ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান পদে এ অঞ্চলের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী ভোটযুদ্ধে মুখোমুখি হচ্ছেন এমন আভাষ পাওয়া যাচ্ছে।
আলোচিত দুই প্রার্থী হলেন একজন মহাজোট সরকারের শরীক দল জাতীয় পাটি জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এএইচএম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। অপরজন হলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সভাপতি এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান আলহাজ সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি। কক্সবাজার জেলার রাজনীতি অঙ্গনে এ দুই প্রার্থী অধিক পরিচিত মুখ। পাশাপাশি জনপ্রিয়তার বিচারে তাঁরা এখনো বিদ্যমান রয়েছেন জনগনের কাছে। হেভিওয়েট এ দুই প্রার্থীর বাড়ি কাকতলীয় ভাবে জেলার চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে।
জানা গেছে, জাতীয় পাটি জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি এএইচএম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ ইতোমধ্যে চকরিয়ায় সাংবাদিকদের সাথে কয়েকদফা মতবিনিময় সভা করেছেন। সাংবাদিকদের সাথে আলাপ কালে তিনি আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ সালাহ আহমদ সিআইপি ইতোমধ্যে আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর ধানমন্ডিস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
সুত্রে জানা গেছে, জাতীয় পাটি জেপি আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারে থাকলেও মুজিব বাহিনীর কমান্ডার সাবেক এমপি এএইচএম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ তিনি নিজের ব্যক্তি ইমেজকে কাজে লাগিয়ে জেপির ব্যানারে প্রার্থী হবেন বলে এমন গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে। পাশাপাশি তিনি শরীক দল হিসেবে আওয়ামীলীগের কাছ থেকে কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের এই আসনটি জেপির জন্য চাইছেন বলেও সুত্রে প্রকাশ। এ জন্য তিনি জেপির চেয়ারম্যান বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এএইচ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ একজন বরণ্য রাজনীতিবিদ তেমনি সুবক্তাও বটে। এ কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে স্বাধীনতার পর তাকে সরকারীভাবে স্কলারশীপ দিয়ে বুলগেরিয়ায় পাঠিয়েছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের ছাত্র থাকাকালীন ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। ওইসময় নির্যাতন ও কারাভোগ করেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও কক্সবাজার মহকুমা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে জাতীয় পাটি (এরশাদ) সরকারের আমলে চকরিয়া উপজেলার প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান, ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ সংসদের এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদায় কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।
অপরদিকে প্রায় ১৩বছর জেলা আওয়ামীলীগের হাল ধরে থাকা প্রবীণ রাজনীতিবিদ সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি নতুন সম্মেলনে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্বান্তকে স্বাগত জানিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব নতুন কমিটির হাতে তুলে দিয়েছেন। সদ্য অনুমোদিত জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে তাকে সম্মানিত সদস্য রাখা হয়েছে। তিনি ইতোপুর্বে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে তিনবার নির্বাচন করেছেন। বিএনপি জামায়াতের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসনে তিনি বারবার অল্প ভোটে হেরে যান। তবে তার পরাজয়ের পেছনে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কোন্দল ও গ্রুপিংয়ের একটি প্রভাব বরাবরেই অব্যাহত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে ।
সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে নতুন কমিটি ঘোষনার পর সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপিকে নিয়ে তার নির্বাচনী এলাকা বিশেষ করে চকরিয়া পেকুয়া উপজেলার জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্থরের মানুষের মাঝে নতুন করে একটি গুঞ্জন শুরু হয়। তা হচ্ছে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রী পরিষদে উপমন্ত্রী কিংবা কক্সবাজার উন্নয়ন কৃতপক্ষে স্থান দিয়ে অনুপ্রাণিত করবেন। কিন্তু জনগনের আশা ও প্রত্যাশার কোনটি তার ভাগ্যে জুটেনি। তারপরও সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি দলীয় কার্যক্রমে নিজেকে আগলিয়ে রেখেছেন। সর্বশেষ তিনি কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর দলীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন।
জানা গেছে, দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের সাথে গণভবনে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সিদ্বান্ত জানানো হয়েছে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তৃনমুলের পছন্দের ৫জন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠাবে জেলা আওয়ামীলীগ।
সালাহ উদ্দিন সিআইপির ঘনিষ্টজনরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে যেসব প্রার্থীর তালিকা উঠবে আশা করি সব কিছু বিবেচনা করে এবার দলীয় মনোনয়ন বোর্ড সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপিকে প্রার্থী ঘোষনা করবে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো তৃনমুলের নেতৃত্বকে পছন্দ করেন। #

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।