কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানের উন্নিত করতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের ইন্টেরিয়ম প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজারের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে ডমেস্টিক এয়ারলাইন্স সুবিধা রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের কোনো সুবিধা না থাকায় ঢাকা হয়ে কক্সবাজারে যেতে হয় বিদেশি পর্যটকদের। তারা যেন সরাসরি যেতে পারেন, সে লক্ষ্যে বিদ্যমান টার্মিনাল ভেঙে প্রায় ১০ একর জমিতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আদলে দোতলা টার্মিনাল ভবন নির্মিত হবে। একসঙ্গে এক হাজার যাত্রী হ্যান্ডেল করতে সক্ষম হবে ১ লাখ ১০ হাজার বর্গফুটের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালটি।
চলতি সময় থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে ইন্টেরিয়ম প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে অর্থের সংস্থান করা হবে। উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে ধাপে ধাপে ব্যয় বৃদ্ধিরও চিন্তা রয়েছে সরকারের।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ম্যানেজার সাধন কুমার মহন্ত বলেন, ক্রমেই বাড়ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরের চাহিদা। সব সময় কক্সবাজারে থাকে বিদেশি পর্যটক। কিন্তু পর্যটকরা ঢাকা হয়ে কক্সবাজারে আসেন। ফলে অনেক সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাদের। এসব বিবেচনা করেই আন্তর্জাতিক মানের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল করবো। ফলে পর্যটকদের আর ঢাকা হয়ে কক্সবাজারে আসতে হবে না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে শুধু মাত্র ডমেস্টিক ফ্যাসিলিটিজ রয়েছে। বিদ্যমান টার্মিনালটি রেখে উন্নয়ন করাও সম্ভব নয়। তাই বিদ্যমান টার্মিনাল ভেঙেই নতুন করে নির্মাণ করবো। যেখানে থাকবে সকল ধরনের উন্নত মানের সুবিধা।
বিমানবন্দরের সিকিউরিটিও ধাপে ধাপে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে। এ লক্ষ্যে পরামর্শকদের চাহিদা অনুসারে উন্নতমানের স্ক্যানারও কেনা হবে। থাকবে উন্নত মানের ট্যাক্সিওয়ে, উড়োজাহাজ পার্কিংসহ ভিআইপিদের জন্য পার্কিং সুবিধা।
প্রকল্পের পরিচালক আমিনুল হাসিব জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আদলে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালটি নির্মিত হবে। একই সময়ে ৫০০ যাত্রী দেশের বাইরে যেতে পারবেন এবং ৫০০ যাত্রী বিদেশ থেকে দেশে আসতে পারবেন। বোয়িং-৭৭৭-এর মতো বড় বড় উড়োজাহাজ অবতরণের সকল ধরনের অবকাঠামোও থাকবে নতুন এই প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে। অন্তবর্তীকালীন আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে রুপ নেবে কক্সবাজার বিমানবন্দর।
এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প আরো এগিয়ে যাবে এমনটি মনে করছেন জেলার বিভিন্ন পেশার লোকজন। পর্যটন ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট মোশারফ হোসেন দুলাল জানান, ঢাকা হয়ে কক্সবাজার আসতে হয় বিধায় বিদেশী পর্যটকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিদেশী পর্যটকরা সরাসরি কক্সবাজার আসতে পারবেন। এতে পর্যটকের সংখ্যা আরো বাড়বে।
কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, এটি সরকারের যথাযথ সিদ্ধান্ত। কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানের হলে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালও আন্তর্জাতিক মানের হতে হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।