বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজার সরকারি কলেজে দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণের জটিলতাসহ ১২ দফা দাবি আদায় নিয়ে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল ১১টা থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের রুম ও প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। কলেজ প্রশাসনও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা তালা দেন গেইটে। এসময় ভাংচুর করা হয়েছে চেয়ার। এতে আতঙ্কে অপরাপর শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস ছাড়েন। দুপুর সাড়ে ১২টার সদর থানা পুলিশ ও কলেজ ছাত্রলীগ নেতারা গিয়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসব সাধারণ শিক্ষার্থীদের সকল দাবি বৈঠকের মাধ্যমে পূরণের আশ্বাস দেন। এতে কোনো শিক্ষক লাঞ্চিত বা আহত হননি।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম জানান, কলেজের পূর্বপাশে একটি সড়ক নির্মাণ নিয়ে কিছু ঝামেলা চলছে কয়েকদিন ধরে। গতকাল রোববার দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ স্থগিত করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে। এরমধ্যে রোববার রাতে সড়কে মাটি ফেলার সময় চারজনকে আটক করে সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন।
কলেজ অধ্যক্ষ আরও বলেন, আটকের বিষয় নিয়ে সোমবার সকাল ১১টা থেকে কলেজের কিছু শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে এবং প্রশাসনিক গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে আমরা অবরুদ্ধ ছিলাম প্রায় এক ঘন্টা। পরে সদর থানার ওসি ও কলেজ ছাত্রলীগ নেতারা এসে তালা ভেঙে উদ্ধার করেন। তবে এতে কোনো শিক্ষক আহত বা লাঞ্চিত হয়নি। রুম থেকে বের হতে না পারার কারণে কারা তালা ঝুলিয়েছে তা সঠিক জানতে পারছিনা। তবে এতে কিছু বহিরাগত ছেলে ছিল।
কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, কলেজের রাস্তা নির্মাণের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে। এক পর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে যায়। পরে ছাত্রলীগের নেতারা গিয়ে এই আন্দোলন শান্ত করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা শুনে। পরে আমরা আন্দোলনরতদের শান্ত করি।’
কক্সবাজার কলেজ ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আন্দোলনে কোনো বহিরাগত ছিল না। সবাই কলেজের শিক্ষার্থী। হয়ত কয়েকজন ছাত্রলীগের কর্মী এতে ছিল। এখানে কোনো শিক্ষক লাঞ্চিত হয়নি। বরং আমরা গিয়ে অধ্যক্ষের রুমে তালা ভেঙে উদ্ধার করি। এতে পুলিশও ছিল আমাদের সাথে। তিনি বলেন, সাধারন শিক্ষার্থী ও কলেজ ছাত্রলীগের দাবি হলো- কলেজের দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়ন করা, কলেজের মূল গেইট থেকে জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা গোলাম আজমের চিহ্ন তুলে ফেলা, কলেজের আশপাশে জামায়াত-শিবিরের দখলে থাকা জায়গা উদ্ধার করা, মসজিদ সংস্কার করা, অধ্যক্ষের রুমে প্রবেশ পথে শিবিরের দলীয় চিহ্ন ভেঙে ফেলা, কলেজের পিছনে কলেজের জমিতে জামায়াত নেতার স্কুল তুলে দেয়াসহ ১২ দফা দাবি দেয়া হয়।
কক্সবাজার সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন- কলেজের দ্বিতীয় রাস্তা নির্মাণ নিয়ে কলেজ প্রশাসন ও কলেজ ছাত্রলীগের মধ্যে মতবিরোধ চলে আসছে। এই নিয়ে সোমবার সকালে কলেজ ছাত্রলীগ আন্দোলন করে। এতে আমরা গিয়ে তাদের শান্ত করি এবং প্রশাসনের সাথে বৈঠক করি। হয়ত দ্রুত সময় তা সমাধান হবে। এতে কোনো হতাহত হয়নি। তবে কলেজে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।