কেন উইলিয়ামসন, কোরি অ্যান্ডারসন, মার্টিন গাপটিলরা নেই। বলতে গেলে নবীন একটা দল নিয়ে খেলতে নেমেছে নিউজিল্যান্ড। টাইগারদের পুঁজি ছিল দুর্বল। ২৫৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে থাকা নিউজিল্যান্ড এক পর্যায়ে বিপদেই পড়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জিতে নিল ৪ উইকেটের ব্যবধানে! সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ফরম্যাটেই হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। সেই কিউই জুজু এখনও কি তাড়া করে ফিরছে টাইগারদের?
বাংলাদেশের দেওয়া টার্গেটে তাড়া করতে নেমে প্রথম দলীয় ৩৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ এক বলে মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদের তালুবন্দী হন ২৭ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে ২৭ রান করা লুক রঞ্চি। কিউইদের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে রানআউটে। মোসাদ্দেকের বলে টি ল্যাথাম অফসাইডে ঠেলে দিয়েই দৌড় দিলেন। তার আহ্বানে সাড়া দিতে গিয়ে ১৭ রান করে ফিরতে হলো ওয়ার্কারকে।
কিউই দূর্গে তৃতীয় আঘাত হানেন গতিদানব রুবেল হোসেন। রুবেলের বলে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দী হন বিধ্বংসী ওপেনার টম ল্যাথাম। আউট হওয়ার আগে তিনি ৬৪ বলে ৩ চার এবং ১ ছক্কায় ৫৪ রান করেন। এরপর রস টেইলরকে (২৫) ফিরিয়ে দ্বিতীয় শিকার করেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই পর্যায়ে বেশ চাপে পড়ে যায় কিউইরা। কিন্তু পঞ্চম উইকেটে ৮০ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন নেইল ব্রুম আর জেমস নিশাম। মূলতঃ এই জুটিই ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় বাংলাদেশকে! রুবেল হোসেনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ব্রুম (৪৮) এলবিডাব্লিউ হয়ে গেলে ভাঙে এই জুটি। ৫২ রান করে নিশামও মাশরাফির শিকার হন। তবে এতে পরাজয় ঠেকানো যায়নি। ১৫ বল হাতে রেখেই জিতে যায় কিউইরা।
এর আগে ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ২৫৭ রান তোলে বাংলাদেশ। শুরু থেকেই্ প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হন ওপেনার সৌম্য সরকার। অপর প্রান্তে ধীরস্থির ছিলেন তামিম। তবে ৪২ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৩ রান করে নিশামের বলে মুনরোর হাতে ধরা পড়েন তামিম। ৭২ রানের দারুণ ওপেনিং জুটির ইতি ঘটে এভাবেই। প্রথম ম্যাচে ০ রানে আউট হওয়া সাব্বির আজ ১ রান করে স্যান্টনারের বলে বোল্ড হয়ে যান।
দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর ৫৩ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারে ৫ম হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন সৌম্য। তৃতীয় উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে তার ৩৮ রানের জুটিটা বেশ জমে গিয়েছিল। বেশ সাবলীল খেলছিলেন সৌম্য। সবাই যখন স্বপ্ন দেখছিল সৌম্যর ইনিংসটি তিন অংকে যাবে; তখনই ছন্দপতন! ইশ সোধির বলে সৌম্য ল্যাথামের তালুবন্দী হয়ে বিদায় নেন ৬৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৬১ রান করা সৌম্য।
সৌম্যর পর বাজে শট খেলে ইশ সোধির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচেও তিনি ১৪ রানে আউট হয়েছিলেন; আজ মাত্র ৬ রান করলেন। হাফ সেঞ্চুরি করে টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও সৌম্য সরকারের পথ ধরেন। ৬৬ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে ৫৫ রান করে নিশামের বলে উইকেট কিপার রঞ্চির গ্লাভসবন্দী হন ‘মি. ডিপেন্ডেবল’।
দলকে আড়াইশর ঘর পার করতে দারুণ অবদান রাখেন মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ এবং তরুণ মোসাদ্দেক হোসেন। পঞ্চম এবং ৬ষ্ঠ উইকেটে ৪৯ এবং ৬১ রানের দুটি কার্যকর জুটি পায় বাংলাদেশ। রিয়াদ ৫৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৫১ এবং মোসাদ্দেক ৪১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৪১ রান করেন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ওপেনার সৌম্য সরকার (৬১)।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।