নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে (আহ্বায়ক) ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছেন মো. আবদুল হামিদ। বুধবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সার্চ কমিটিকে রাষ্ট্রপতির কাছে তালিকা দাখিল করতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সে তালিকা থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।
জানা গেছে, সার্চ কমিটির সুনির্দিষ্ট কোনো কার্যপদ্ধতি নেই। তারা প্রথম বৈঠকেই কার্যপদ্ধতি ঠিক করে নিতে পারেন। সুপারিশ চূড়ান্ত করতে কমিটিকে একাধিক বৈঠক করতে হতে পারে। কাজের সুবিধার্থে সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপকারী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সময় নির্দিষ্ট করে দিয়ে সম্ভাব্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং এবং অন্যান্য কমিশনারের নাম চাইতে পারে।
তবে গত নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় সার্চ কমিটি নাম চাইলেও বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল তা পাঠায়নি। শুধু আওয়ামী লীগ তাদের সুপারিশ করা তালিকা সার্চ কমিটিতে পাঠিয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদাধিকারবলে সার্চ কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। সার্চ কমিটি চূড়ান্তভাবে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পাঠাবে। এ ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ প্রতিটি পদে তারা দু’জনের নাম প্রস্তাব করবে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।
উল্লেখ্য নতুন ইসি গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ৩১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের পর সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি গঠন করেন। এবার নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হচ্ছে।
সংবিধানে নির্দেশনা থাকলেও নির্বাচন কমিশন গঠনে এ-সংক্রান্ত কোনো আইন নেই। সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলীসাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দান করিবেন।’
সংবিধানের এই ধারায় নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির এখতিয়ারের কথা বলা হলেও সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘এই সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন। তবে শর্ত থাকে যে, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে আদৌ কোনো পরামর্শ দান করিয়াছেন কিনা এবং করিয়া থাকিলে কী পরামর্শ দান করিয়াছেন, কোনো আদালত সেই সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের তদন্ত করিতে পারিবেন না।’
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।