২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

কী আছে ট্রাম্পের নতুন ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞায়’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাত মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর স্থগিত হয়ে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করে নতুন ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ জারি করেছেন। তবে আগের নিষেধাজ্ঞায় যেসব বিষয় নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়ে ট্রাম্প প্রশাসন, এবার তাতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

কার্যকরের তারিখ

 

নতুন নিষেধাজ্ঞা প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের পরপরই কার্যকর হচ্ছে না। ১০ দিন পর ১৬ মার্চ থেকে তা কার্যকর হবে। এর আগে ২৭ জানুয়ারির নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের স্বাক্ষরের পরপরই কার্যকর হয়েছিল। এর ফলে ভিসা থাকা সত্ত্বেও হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারেননি। ওই সাত দেশের অনেক নাগরিককে বিমানবন্দর থেকে, এমনকি বিমান থেকেও নেমে আসতে হয়। যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন, তাদের আটক করা হয়। আর তখনই ওই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন উঠে বিভিন্ন মহল থেকে।

ইরাককে বাদ দেওয়া

 

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সহযোগী ইরাক। মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য এবারের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকেনি ইরাক।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন জানান, ইরাকে স্ক্রিনিং কার্যক্রম জোরদার করার জন্যই দেশটিকে এবারের নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘ইরাক আমাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। আমরা চাই, ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশও এভাবে এগিয়ে আসুক।’

সিরিয়ার ওপর অনির্ধারিত সময়ের নিষেধাজ্ঞায় পরিবর্তন

 

আগের নিষেধাজ্ঞায় নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছিল, সাত দেশের ওপর ৯০ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও শরণার্থীদের ক্ষেত্রে ১২০ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে সিরীয় শরণার্থীদের গ্রহণের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছিল অনির্ধারিত। তবে এবারের নিষেধাজ্ঞায় ছয়টি দেশের ওপরই ৯০ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

আগের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, ‘সিরীয় নাগরিকদের শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করাটা মার্কিন স্বার্থ ক্ষুণ্ন করবে।’ উল্লেখ্য, পূর্ববর্তী ওবামা প্রশাসন ২০১৬ সালে ১০ হাজার সিরীয় শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ দিয়েছিল।

গ্রিন কার্ডধারীরা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন না

 

নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ছয় মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র থাকলে তারা নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত হবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র ‘গ্রিন কার্ড’ নামে পরিচিত।

আগের নিষেধাজ্ঞায় ভিসা, গ্রিন কার্ড, বা দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা হাজার হাজার মানুষও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার হারিয়েছিলেন।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও ছাড় পাননি

 

এবারের নিষেধাজ্ঞায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আলাদা করে কিছু বলা হয়নি। ২৭ জানুয়ারির নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছিল, নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত সাত মুসলিম-প্রধান দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চাইতে পারবে। এবার নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশগুলোর খ্রিস্টান বা অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা কোনও ছাড় পাচ্ছেন না। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবশ্য এজন্য এই নিষেধাজ্ঞাকে মুসলিম নিষেধাজ্ঞা বলতে নারাজ। এবারের নিষেধাজ্ঞায় আগেরবারের মতোই মার্কিন শরণার্থী কার্যক্রম ১২০ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।

এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ‘নতুন নিষেধাজ্ঞায় আদালতে তোলা প্রশ্নগুলোর মীমাংসা করা হবে। কেননা, ফেডারেল আপিল আদালতের আদেশে তার আগের নির্বাহী আদেশটি স্থগিত হয়ে গেছে।’

তিনি তখন আরও বলেছিলেন, ‘নতুন আদেশটি অনেক নিখুঁত হবে। আমরা এমন নির্বাহী আদেশ জারি করব, যা আমাদের দেশকে ব্যাপকভাবে সুরক্ষা দেবে।’

উল্লেখ্য, সোমবার হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনুসারে নতুন ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’র ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেলি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ও আইনমন্ত্রী জেফ সেশনস।

নতুন জারি করা নিষেধাজ্ঞায় আগের তালিকায় থাকা ইরাককে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে অপর ছয়টি দেশের নাগরিকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়েছে।

ট্রাম্পের জারি করা নতুন এ নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের যেসব নাগরিকদের বৈধ ভিসা নেই তারা আগামী ৯০দিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। ১৬ মার্চ থেকে নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর হবে।

প্রসঙ্গত, ক্ষমতা গ্রহণের পরই ২৭ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে সাত মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে সিয়াটলের একজন বিচারক ট্রাম্পের ওই নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের আদেশ দেন। ট্রাম্প প্রশাসন ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলেও সান-ফ্রান্সিসকোভিত্তিক তিন বিচারকের প্যানেল তা খারিজ করেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।