উখিয়া উপজেলার ব্যবসায়িক কেন্দ্র কোটবাজারে সন্ধ্যা নামতেই বসে রমরমা মাদকের হাট। বেড়ে যায় মাদকসেবী এবং বখাটেদের উৎপাত। ষ্টেশনের অলিগলিতে মাদক বিক্রিসহ সরবরাহ দেওয়ার মত ঘটনা ঘটছে প্রকাশ্যেই। মাদক বিক্রি এবং সরবরাহের স্থান থেকে বাদ যাচ্ছে না স্কুল, মসজিদ এবং কবরস্তানের পাশ্ববর্তী এলাকাও। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় আতংকিত হয়ে পড়েছে স্থানীয় জনসাধারণ।
উপজেলার কোটবাজারে জালিয়াপালং, রত্নাপালং, হলদিয়াপালং, রাজাপালং, পালংখালী, রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন থেকে বিভিন্ন কাজে প্রতিনিয়ত মানুষ আসা-যাওয়া করে। এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে মাদকের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিকে স্থানীয়রাও মাদক সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়ায় ব্যবসা সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কোটবাজারে মসজিদ রোড, ভালুকিয়া রোড, দরগামুরাস্থ রোড, এন আলম মার্কেট, উত্তর ষ্টেশন এবং দক্ষিণ ষ্টেশনের অলিগলিতে সন্ধ্যা নামলেই মাদক বিক্রেতাদের উৎপাত বেড়ে যায় এবং প্রকাশ্যে মাদক বিক্রির টাকার লেনদেন করা হচ্ছে। পাশ্ববর্তী রুমখা বাজার, মনির মার্কেট, পাইন্যাশিয়া, জুম্মা পাড়া, ক্লাস পাড়া, করই বনিয়া, চাকবৈঠা এলাকা ও মাদকবিক্রেতা এবং সেবীদের নিরাপদ স্থান বলে জানা গেছে। এছাড়া ও টাকার বিনিময়ে কিশোর এবং বৃদ্ধদের হাত দিয়ে নিরাপদে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে এইসব মাদক। ফোনে অর্ডার করলে ও নির্দিষ্ট জায়গামত মাদক সরবরাহ করে দেয় এইসব শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
কোটবাজার জামে মসজিদের কয়েকজন মুসল্লির সাথে কথা বলে জানা যায়, মসজিদ রোডটি মাদকের জন্য নিরাপদ স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে মাদকবিক্রেতা এবং সেবীদের চরম উৎপাতে নামাজ পড়া দুরুহ হয়ে দাড়ায়। মুসল্লিদের দাবী শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পরিবেশ আরো খারাপ হয়ে দাঁড়াবে।
কোটবাজারের চারিপাশ মাদকের ভয়াবহ কালো থাবায় চলে গেছে। বহিরাগত মাদকসেবীরা ও ইদানীং কোটবাজারে এসে জড়ো হচ্ছে। এইসব মাদক সিন্ডিকেট শক্তিশালী হওয়ায় মানসম্মানের ভয়ে এসব বিষয়ে কোথাও অভিযোগ করতে পারে না বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিমত।
কোটবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতির পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন জানান, মাদকাশক্তি ব্যবসায়ী সমাজের জন্য আতংকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদকাসক্ত হয়ে অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্টানে মালিকদের হয়রানি করেন। এছাড়াও অপরিচিতদের কোন প্যাকেট বা দ্রব্য নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে রাখা এখন ভীতিকর হয়ে উঠেছে।
ছাত্রনেতা নাছির উদ্দিন জানান, অর্থের লোভে যুবক মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। অনেকেই ফ্যাশনট্যান্ড হিসেবে নিয়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। বাদ যাচ্ছে না স্কুল, কলেজ গামী ছাত্রসমাজ ও। এর বিরুপ ভোগ করতে হচ্ছে প্রভাব পরিবার, সমাজ, বন্ধুবান্ধবসহ সকলকে।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আদিল চৌধুরী বলেন, মাদক বর্তমানে কক্সবাজার তথা দক্ষিণাঞ্চল উখিয়া -টেকনাফের বড় সংকটে পরিণত হয়েছে। মাদকাসক্তির প্রভাবে আইনশৃঙ্খলা অবনতির মত ঘটনা ঘটেছে প্রতিনিয়ত। অতিশীঘ্রই প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থার মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী এবং সেবীদের দমন করতে হবে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের জানান, মাদক দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে। ইতিমধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।