নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া দরগাহ পাড়া এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে বাবুলের ভাড়াবাসা থেকে ৫ বেদে নারীকে আটক করেছে রামু থানা পুলিশ। এসময় বাড়ীর মালিক জসিম উদ্দিন বাবর প্রকাশ বাবুলকে আটক করা হলেও পরবর্তীতে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ২৩ হাজার ৫শ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবী করেছে পুলিশ। তবে স্থানীয়দের দাবী, তাদের কাছ থেকে লক্ষাধিক পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিলো।
মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ৫ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে পুলিশ আটক করে। তবে এসময় বাড়ীর মালিক বাবুলকেও আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, ঢাকা সাভারের পোড়াবাড়ী এলাকার মন্টু মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫০) একই এলাকার হাছানের স্ত্রী হাসিনা আক্তার (২৬) রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে বিমলা আক্তার (২৭) কাজী মিয়ার মেয়ে আলেয়া আক্তার (২৫) আমজাত আলীর মেয়ে সুজাতা বিবি (৩০) এরা প্রত্যের বাড়ী ঢাকা সাভারে হলেও বর্তমানে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া দরগাহ পাড়ায় ওই ভাড়াবাসায় থাকতেন বলে জানা গেছে।
দরগাহ পাড়া এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে ছৈয়দ মিয়া জানান, সকাল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার সময় ওই ভাড়াবাসায় পুলিশ আসলে সে বেদে নারীদের ব্যাগভর্তি ১১ কাঠ ইয়াবা। মাদক ব্যবসায়ীদের মতে (১ কাঠে ১০ হাজার) এই ধরনের বড় প্যাকেট ১০টি আর একটা ছোট প্যাকেট, তার মতে প্রায় লক্ষাধিক পিচ ইয়াবা সে তার নিজের হাতে পুলিশকে উদ্ধার করে দেয়। অথচ পুলিশ বলছে মাত্র ২৩ হাজার ৫শ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করে তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রাত-দিন দায়িত্ব পালন করে গেলেও খরুলিয়ার দরগাহ পাড়ায় এর কোনো গতি নেই। যার ফলে ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীরা আরও বেপরোয়া হয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে ইয়াবা ও মাদক পাচার অব্যাহত রেখেছে।
প্রায় দুই বছর ধরে আটককৃত বেদে নারীদের দিয়ে দরগাহ পাড়া এলাকার একটি মাদক সিন্ডিকেট ইয়াবা পাচার করে আসছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নোয়াখালী থেকে আসা সোহাগ, ওই ভাড়া বাসার মালিক জসিম উদ্দিন বাবর প্রকাশ বাবুল, জাহানঙ্গীর আলম, আবুল ফয়েজ, নাছির উদ্দিন মেম্বার, শফি আলম, নুরুল হক, মোস্তফা, জমির উদ্দিন সাকিব, আবু জাফর, হালিমুর রশিদসহ গড়ে ওঠেছে একটি সিন্ডিকেট। বেদে নরীরা দীর্ঘদিনধরে উল্লেখিত সিন্ডিকেটের ইয়াবার চালান ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৌশলে ইয়াবার চালান পাচার করে আসছে। বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে পাচারকারীরা আটক হলেও বরাবরে এইসব মাদকের গডফাদাররা থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এসব ইয়াবা সিন্ডিকেটের উল্লেখিত গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা না হলে হাজারও মাদকবিরোধী অভিযানে সফলতা আসবে না। কারণ এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীর রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ও তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের রাঘববোয়াল ইয়াবা সিন্ডিকেট।
রামু থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৩ হাজার ৫শ পিচ ইয়াবাসহ ৫ বেদে নারীকে আটক করা হয়। এসময় আমরা বাড়ীর মালিক বাবুলকেও আটক করে নিয়ে আসি। কিন্তু তার সম্পৃক্তা না পেয়ে আমরা তাকে ছেড়ে দিই। ১ লাখের অধিক পিচ ইয়াবার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, একটা ট্যাবলেটও এদিক-ওদিক হয়নি।
তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বিকেলে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।