বিশ দলীয় জোটের চলমান হরতাল অবরোধে নাশকতার ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত ৩৮০
মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই। গত ৬ জানুয়ারি থেকে দায়ের করা এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে বিএনপির শীর্ষ থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের ১৫শ’ নেতাকর্মীকে। চলমান হরতাল অবরোধে বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে সময়ক্ষেপণ হওয়ায় এসব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা তিনটি মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হবে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, কিছু মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তবে বাড়তি দায়িত্ব পালনের জন্য এসব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে সময় লাগবে। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী ও রমনা থানার দুটি মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার ৪ জন ইতোমধ্যে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে শিগগির এসব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, এসব মামলায় হুকুমের আসামি বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। তাদের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কতটুকু তা যাচাই-বাছাই করতেও অনেক সময় লেগে যায়। পাশাপাশি এজাহারভুক্ত অনেক আসামিও পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে মামলার তদন্ত অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।
জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে টানা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মধ্যে শুক্র ও শনিবার বাদে দফায় দফায় হরতালও চলছে। ইতোমধ্যে অবরোধ-হরতালে দুর্বৃত্তদের ছোড়া ককটেল ও অগ্নিবোমায় ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ছাড়া বন্দুকযুদ্ধ, গণপিটুনিতে ৩৬ ও সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ লাশ এবং সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি অগ্নিবোমায় দগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বিছানায় রয়েছেন শতাধিক নিরীহ মানুষ। এর মধ্যে রাজধানীতেই তিন শতাধিক যানবাহনে আগুনের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ আরো অনেকে আহত হন। এসব ঘটনায় রাজধানীর ৪৯টি থানায় ৩৮০ টি মামলা দায়ের করা হয়।
এসব মামলার মধ্যে যাত্রাবাড়ী, গুলশান ও রমনা থানার তিনটি মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়। পাশাপাশি শাহবাগ থানার একটি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুকেও হুকুমের আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। পাশাপাশি বাড্ডা থানার দুটি মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহম্মেদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এ ছাড়া খালেদার অপর উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুকেও দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের নামেও ৫ জানুয়ারির পর অন্তত ৫টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এসব নেতাকে দফায় দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে ঘটনার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি এখনো পর্যালোচনা পর্যায়ে রয়েছে। পল্টন থানার দুটি মামলায় আসামি করা হয় মির্জা আব্বাসকে। মামলার পর থেকে তিনিও পলাতক।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।