২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

গোমাতলী রাজঘাট সড়ক সংস্কারে ঠিকাদারের খামখেয়ালীপনা!

কক্সবাজার সদরের উপকূলীয় ইউনিয়ন পোকখালীতে সংস্কারের নামে ২ কিলোমিটার রাস্তা খুঁড়ে রেখে উধাও হয়েছে ঠিকাদার। যার কারণে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থী, চাষী, শ্রমিকসহ ৮ হাজারের অধিক মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ। বর্ষার পূর্বেই সংস্কার না হলে আন্দোলনে নামারও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন এলাকাবাসী।
সূত্রে জানা গেছে, পোকখালীর উত্তর গোমাতলী এলাকার বদি আলম মৌলভীর বাড়ীর সামনে থেকে রাজঘাট ৫নং স্লুইস গেইট পর্যন্ত বিশ^ব্যাংকের অর্থায়নে এলজিইডি অফিসের তত্ত্বাবধানে প্রায় আড়াই কোটি টাকার ব্যয়ে ২ কিলোমিটার সড়কটি উভয়পাশের্^ গাইড ওয়াল, ৩৬ ইঞ্চি বালি, পিচ ঢালাইসহ আনুষাঙ্গিক কাজের বাজেট বরাদ্ধ হয়। ৯০ দিনের মধ্যে কাজ সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও দায়িত্বে অবহেলা ও খামখেয়ালীপনার কারণে এক মাসেও ২০ শতাংশ কাজ শেষ করতে না পারায় এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। এমনকি কাজ শুরুর পূর্বেই সাইনবোর্ড টাঙানোর নিয়ম থাকলেও মানা হয়নি এ নির্দেশ।
জানা গেছে, রাজঘাট এলাকায় ২ হাজারের অধিক লবণ চাষী, দেড় হাজারের মত ছাত্রছাত্রী, রোগীসহ প্রায় ৮ হাজার জনগণকে চলাচল করতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ নিয়ে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় শ্রমিক নেতারা জানান, সড়কটি খুঁড়ে ফেলে রাখায় কোন বড় লবণ ব্যবসায়ী এলাকায় আসতে অনিহা প্রকাশ করছে। ফলে কোটি কোটি টাকার লবণ রপ্তানী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
স্থানীয় দেলোয়ার হোছাইন, আবদুর রহিম, জামাল উদ্দীন অভিযোগ করে জানান, উক্ত এলাকাটি এক ধরণের বাণিজ্যিক এলাকা হিসাবে স্বীকৃত। লবণ, মৎস্য চাষীদের একমাত্র আয়োর উৎস হচ্ছে এখান থেকে। এমনকি গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয়, মুনচেহেরীয়া বালিকা মাদ্রাসা, হোছাইনিয়া বালিকা মাদ্রাসা, উত্তর গোমাতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের দেড় হাজারের অধিক ছাত্রছাত্রীর যাতায়াতের বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। জরুরী কোন রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে ২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গাড়ীর জন্য বেগ পেতে হচ্ছে। তারা আরো জানান, বিগত ১ বছর ধরে রোয়ানুর প্রভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে উক্ত এলাকাটি। সরকারী কোন বরাদ্ধ না থাকা সত্ত্বেও এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় রাস্তাটি বাঁধ দিয়ে রক্ষা করে। হঠাৎ করে ঐ সড়কটি এলজিইডি টেন্ডার দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংস্কারের নামে রাস্তার একপাশের^ বুলডোজার দিয়ে কেটে ক্ষতবিক্ষত করে রাখে। এর ফলে সাধারণ একজন মানুষও হেটে যেতে কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে।
মাদ্রাসার ছাত্র হাসান জানান, গত কয়েকদিন ধরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে খুঁড়ে রাখা সড়কটি কাঁদা জলে সয়লাব হয়ে পড়েছে। মাদ্রাসায় যেতে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। যুবলীগ নেতা জামাল উদ্দীন জানান, রাজঘাট এলাকার আজিম পাড়া, চরপাড়া, গাইট্টাখালী এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসংখ্যা শিক্ষার্থী সহ প্রায় ৭/৮ হাজার সাধারণ লোকজন প্রতিনিয়ত চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে। বিগত দু’বছর পূর্বে এই রাস্তাটি টেন্ডার হয়। পরে ঠিকাদার রাস্তা খুঁড়ে কাজ না করে লাপাত্তা হয়ে যায়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাস খানেক ধরে ঐ সড়কে কোন কাজকর্ম চলছে না। এই নিয়ে নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছেন বলে জানান দেলোয়ার, আবদু রহিমসহ সচেতন এলাকাবাসী। যার ফলে হাজার হাজার একর লবণ চাষাবাদ যে কোন মুহুর্তে বিলিন হয়ে যেতে পারে বলে চাষীদের আশংকা।
স্থানীয় সমাজসেবক সেলিম উদ্দীন জানান, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে গোমাতলী রাজঘাটবাসীকে ভোগতে হবে মরণ দশায়। এমনকি জেলা সদরের বিভিন্ন দপ্তরে প্রয়োজনীয় কাজকর্মে আসা যাওয়া করতেও সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আবার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও তাদের প্রিয় শিক্ষাঙ্গনে যেতেও অনিহা প্রকাশ করছে। এ এলাকার লোকজন চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে এলাকাবাসীর দূর্ভোগ লাঘব করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহবান জানান।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার কাজে নিয়োজিত হাবিব উল্লাহ নামের এক ব্যক্তির সাথে শতাধিকবার কল করলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কক্সবাজার এলজিইডি অফিসের উপ-পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেবেন বলে জানান।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।