উখিয়ার সীমান্তবর্তী ঘুমধুমে ১২টি স্পট থেকে পুরোদমে চলছে পাহাড় কাটা। স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে একাধিক স্পটে অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ঠদের জরিমানাসহ মামলা দায়ের করলেও ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মহল দিনরাত উপেক্ষা করে বিশাল আকৃতির সুউচ্চ পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে চলছে। অথচ ওই স্থানে অবৈধ পাহাড় কাটতে গিয়ে ১জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু ও অপর ২ শ্রমিকের পঙ্গুত্বের ক্ষত এখনো শুকাইনি।
সরেজমিন ঘুমধুম পাহাড় কাটার স্থান ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজে ঘুমধুমের যত্রতত্র পাহাড় কেটে মাটি সরবরাহ দিয়ে আসছে প্রভাবশালী একাধিক সিন্ডিকেট। এভাবে অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে সম্প্রতি জয়নাল নামের একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয় এবং আরো ২জন গুরুতর আহত হয়। তখন স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই রূপন বড়ুয়া বাদী হয়ে পাহাড় কাটা ও শ্রমিক নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করে। এতে ঘুমধুম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সহ ৯ জনকে এজাহার ভূক্ত আসামী করা হয়। ঘুমধুমে পাহাড় কাটা ও শ্রমিক নিহতের ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই সময় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল ঘুমধুমে পাহাড় কাটা ঘটনাস্থল ঘুরে কোন ধরনের পাহাড় না কাটতে নির্দেশ দেন। সাপ্তাহ ধরে পাহাড় কাটা বন্ধ থাকলেও ফের শুরু হয় পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য। স্থানীয় প্রভাবশালী নুর হোসেন, ইমাম হোসেন, ভুট্টো নেতৃত্বে ৩ টি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য পুরোদমে চলে আসছে। বর্তমানে নুর হোসেনের নেতৃত্বে তার বসত বাড়ি ভিটার অংশ, তুমব্রু খাস পাহাড়, মাইল্যংতলী পাহাড়, আবুল ফরাজের পাহাড়, মৃত গাছ কালুর পাহাড়, মকছুদুর রহমানের পাহাড়, গিয়াস উদ্দিন মামুনের পাহাড়, আলমের পাহাড়, নছরত আলীর পাহাড়সহ ১২টি স্পট থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কেটে সরবরাহ দিচ্ছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজে। পাহাড় কাটা বন্ধে প্রসাশনের নির্দেশ থাকা স্বত্বেও নুর হোসেন স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীর ঘনিষ্টজন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতার পরিচয়ে পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য করে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে চললেও তার বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল জানান, সম্প্রতি ঘুমধুম সফর করে পাহাড় কাটা ও শ্রমিক নিহতের ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই দিনই মাটিবর্তী ২টি মিনি ট্রাক জব্দ করে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে পাহাড় কাটলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে জানানো জন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের জানানো হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।